গাজীপুরে মাণিক্য মাধবের রথযাত্রা উপলক্ষে সড়ক বন্ধ করে বসেছে রথের মেলা। ২০ জুন শুরু হওয়া এ রথযাত্রার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শেষ হয় ২৮ জুন উল্টো যাত্রার মাধ্যমে। তবে রথমেলা চলবে ৯ জুলাই পর্যন্ত। আর এতদিন পর্যন্তই দুর্ভোগ পোহাতে হবে স্থানীয়দের।
জানা গেছে, রথ মেলা শুরুর দিন থেকে গাজীপুর জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাণী বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় (রাজবাড়ীর ঢাল) থেকে রথখোলা মোড় পর্যন্ত শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রোডটি বন্ধ করে মেলা বসানো হয়। অন্য দিকে জেলা পরিষদের সামনের রাস্তাটিও দুপুরের পর থেকে বন্ধ করে দেয় মেলা কর্তৃপক্ষ। এতে শহরে প্রবেশের এবং তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ দুটি সড়ক দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে রোগীবহনকারী যানবাহনসহ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
স্থানীয়দের দাবি সরকারি রাস্তা বাদ দিয়ে যেন মেলা বসানো হয়। জনগণের চলাচলের পথ বন্ধ করে দিয়ে ২০ দিন ধরে মেলা চলার কারণে নগরবাসীদের চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়। তবে হাসপাতালে যাওয়ার দুটি বিকল্প পথ থাকলেও সবার কাছে সেগুলো পরিচিত নয়। এতে করে হাসপাতালে জরুরি রোগী আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
আরও পড়ুন: যৌতুক না দেওয়ায় দ্বিতীয় বিয়ে, এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা
এ ব্যাপারে রথযাত্রা ও রথমেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব মুকুল কুমার মল্লিক বলেন, মেলা কমিটির পক্ষ থেকে সড়ক দুটিতে যানবাহন চলাচলের জন্য খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া আছে। কিছু হকার ও ভাসমান দোকানদার রাস্তার মাঝখানে দোকান বসানোর কারণে অনেক সময় সড়কটিতে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আমরা রাস্তা দুটি সচল রাখার চেষ্টা করছি। তিনি আরও বলেন, গাজীপুরের ঐহ্যিবাহী মাণিক্য মাধবের রথমেলাটি প্রায় দেড়শ বছরের পুরনো। মেলাটির যাত্রা শুরু করেছিলেন ইতিহাসখ্যাত ভাওয়াল রাজবংশ। ভাওয়াল পরগণার রায় চৌধুরী বংশের অষ্টম উত্তর-পুরুষ রাজা কালি নারায়ণ রায় চৌধুরীর আমলে এ রথমেলার প্রচলন শুরু হয়। এখন সেই বংশ বিলুপ্ত হলেও রয়ে গেছে মেলার সেই পুরোনো ঐতিহ্য। এখনো রথযাত্রা ও উল্টো যাত্রার দিন হাজার হাজার সনাতন ধর্মপ্রাণ মানুষ রথ টানায় অংশ নেন। প্রচলিত বিশ্বাস রয়েছে যে, উপবাস করে শূচিশুদ্ধ মনে রথ টানায় অংশ নিলে পাশমুক্তি হয় এবং মনোবাসনা পূর্ণ হয়।
এ ব্যাপারে রথযাত্রা ও রথমেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
মো. আমিনুল ইসলাম/জেএস/এএসএম