খেলাধুলা

তামিম ভাগ্যবান, প্রধানমন্ত্রী ডেকেছেন তাকে: মাশরাফি

হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রামে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচের পরদিনই সংবাদ সম্মেলন ডেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন।

অবশ্য ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই তামিম অবসর ঘোষণা থেকে সরে আসতে বাধ্য হন। কারণ, প্রধানমন্ত্রী তামিম ইকবালকে ডেকে তাকে অবসর থেকে ফিরে আসার নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে তামিম ইকবালের আর নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকার সুযোগ নেই। যে কারণে তিনি অবসর থেকে ফিরে আসার ঘোষণা দেন। তবে, দিড় মাসের ছুটি নেন একই সঙ্গে।

প্রধানমন্ত্রী ডেকেছেন এবং অবসর ভেঙে ফেরার নির্দেশ দিয়েছেন- বিষয়টাকে তামিমের সৌভাগ্য হিসেবে বর্ণনা করেছেন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। রাজধানীর ডেফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তামিমের অবসর নিয়ে কথা বলেন মাশরাফি।

তিনি বলেন, ‘আমি এক্ষেত্রে বলব, তামিম খুব ভাগ্যবান যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে ডেকেছে, কথা বলেছে এবং তাকে ক্রিকেটে ফিরিয়ে এনেছে। এই সৌভাগ্য সবার হয় না। ও ১৫ হাজার রান করেছে, দেশের জন্য অনেক কিছু করেছে, এটা সত্যি। কিন্তু দিন শেষে এসে একটা সময় কেউ এগুলো কেউ মনে রাখবে না। তো তামিম এখন যে বয়সে আছে, ওর পারফর্ম করার সময়।’

মাশরাফির মনে হয়, যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিলো, যে কারণে তামিম অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সে পরিস্থিতিতে তাকে মানসিকভাবে আরও শক্তিশালী হওয়া উচিৎ ছিল। তিনি বলেন, ‘দেশকে যখন সেরা কিছু এনে দেবে, তখনই যদি সরে যায়; আমি মনে করি এটা শুধু পারিপার্শ্বিকতার চাপের বিষয় না, তার মানসিকভাবেও শক্ত থাকা উচিত।’

তামিমের দুর্বলতা দেখে হতাশ হয়েছেন মাশরাফি। জাতীয় দলে থাকতে তামিম এবং মাশরাফির মধ্যে সুসম্পর্কের বিষয়টি সবারই জানা। সে কারণে জাতীয় দলে দীর্ঘদিন ধরে খেলা এবং সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে তামিমের মানসিক দুর্বলতা মেনে নিতে পারছেন না মাশরাফি। হয়তো মানসিকভাবে ওই সময় তার ওপর দিয়ে ঝড় গিয়েছে। কিন্তু তাতেও তামিমের মত ক্রিকেটারের দুর্বল হওয়া মানায় না।

মাশরাফি বলেন, ‘সত্যি বললে- তামিমের অবসরটা, আমি মনে হয় আমার কথা বলেছি যে, ৩৪ বছর বয়স আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পারফর্ম করার সময়, অনেকের ক্ষেত্রে। বিরাট কোহলি পারফর্ম করছে না? ওর থেকে বেশি বয়স। ও (তামিম) না খেলার পেছন কারণ কী? আমি জানি না। মূল কথা হচ্ছে যে আমার কাছে যেটা মনে হয়, তামিমের ওপর কী গেছে, আমি তার থেকে বেশি আপসেট। আমি জানি না এগজ্যাক্টলি। আমার সঙ্গে এত কিছু শেয়ার হয়নি। আমি বেশি আপসেট হয়েছি তামিমকে দুর্বল দেখে। কারণ একটা ইন্টারন্যাশনাল প্লেয়ার, ওর পক্ষেও তো অনেকে কথা বলছে। বলছে না? তো সিম্পলি আপনি এটুকু লড়াই করতে পারবেন না, এটা আমার মনে হয়নি। কিন্তু কখনো কখনো মানুষের সাহায্য প্রয়োজন হয়। কখনো কখনো মানুষ ভেঙে পড়ে। তখন মনে হয় কাউকে সাপোর্ট দরকার।’

তামিম এখন পিঠের ইনজুরি চিকিৎসা করানোর জন্য রয়েছেন লন্ডনে। ইনজুরি কাটিয়ে তামিম যেন পুরোপুরি ফিট হয়ে ফিরতে পারেন, সে কামনাও করেন মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, তামিমের শতভাগ ফিট হয়ে আসা উচিত। একইসঙ্গে মানসিক ওরকম প্রস্তুতি থাকা উচিত যে, ও পারফর্মার ছিল, পারফরম্যান্সই তার হয়ে কথা বলবে। এর বাইরে কোচ তার পক্ষে আছে, ক্রিকেট বোর্ড তার পক্ষে আছে নাকি আমরা ওদের পক্ষে আছি, এগুলো ওর মতো ক্রিকেটারের কাছে এগুলো আমরা আশা করব না যে, কে ওর পক্ষে আছে এটা নিয়ে চিন্তা করবে। আমরা চিন্তা করবো ও পারফরমার, পারফর্ম করবে; অটোমেটিক্যালি সবকিছু তার পক্ষে থাকবে।’

মাশরাফি আরো বলেন, ‘এখন যে জিনিসটা হচ্ছে, ওর ইনজুরি ওকে ভোগাচ্ছে। ও পারফর্ম করছে না, কেন করছে না? তার কারণ হচ্ছে ইনজুরি। তাহলে কী করা উচিত? ওর ইনজুরিটা ঠিক করে আসা উচিত। ওই যে বললাম, ডুয়িং দ্য রাইট থিংস। ওর এখন উচিত ইনজুরি নিয়ে চিন্তা করা। ফিট হয়ে আসলে আমি নিশ্চিত ও অটোমেটিক রান করবে আর আগের পরিস্থিতিতে ফিরে আসবে।’

আইএইচএস/