দেশজুড়ে

শিকলবন্দি আসাদুল-হাবিবুরের পাশে দাঁড়ালো জেলা প্রশাসন

কুড়িগ্রামের উলিপুরে শিকলবন্দি মানসিক ভারসাম্যহীন আসাদুল ও হাবিবুরের পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোভন রাঙ্গসা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী মাহমুদুর রহমান দুই পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেন এবং দুজনের চিকিৎসাসহ সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

সোমবার (৭ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণি ও তবকপুর ইউনিয়নে আসাদুল ও হাবিবুরের বাড়িতে গিয়ে এ সহযোগিতা করেন তারা।

এর আগে শনিবার (৫ আগস্ট) রাতে ‘আসাদুল ও হাবিবুরের শিকলবন্দি জীবন’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাগোনিউজ২৪.কম।

প্রতিবেদনে বলা হয়, উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের সাদুল্যা সরকারপাড়া গ্রামের দেলাবর হোসেনের ছেলে আসাদুল ইসলাম। ছোটবেলা থেকে সুস্থ ছিলেন তিনি। চার ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয় আসাদুল। বাবার অভাবের সংসারে হাল ধরতে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে ঢাকায় পাড়ি জমান। গার্মেন্টসকর্মী হিসেবে কাজ করেন দীর্ঘদিন। পরে পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করেন।

আরও পড়ুন: আসাদুল-হাবিবুরের শিকলবন্দি জীবন

বিয়ের এক বছরের মাথায় মারপিট ও অত্যাচার করার অভিযোগ তুলে একতরফা তালাক দিয়ে চলে যান স্ত্রী। সেই শোকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন আসাদুল। পরে পরিবার লোকজন একাধিক বিয়ে দিলেও সংসার টেকেনি। একপর্যায়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন আসাদুল। এরপর থেকে শিকলবন্দি জীবন কাটছে আসাদুলের।

অন্যদিকে হাবিবুর রহমান একই উপজেলার ধামশ্রেণি ইউনিয়নের পোদ্দার পাড়া গ্রামের দিনমজুর আবুদ্দির ছেলে। সেও শিকলবন্দি প্রায় আট বছর। জন্মের পর থেকে সে মানসিক প্রতিবন্ধী।

প্রতিবেদনটি নজরে আসে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফের। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে উলিপুর উপজেলা প্রশাসনকে এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার নির্দেশ দেন।

উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোভন রাঙ্গসা বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আমরা শিকলবন্দি আসাদুল ও হাবিবুরের বাড়িতে গিয়ে তাদের বাবা-মায়ের হাতে আর্থিক সহযোগিতা তুলে দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা আসাদুল ও হাবিবুরের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। ওই দুই ব্যক্তি প্রতিবন্ধী ভাতার আওতাভুক্ত। তাদের চিকিৎসার খরচের জন্য উপজেলা প্রশাসন বরাবর আবেদন করতে বলা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, অসহায় দুই পরিবারে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। আজ (গতকাল) আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

ফজলুল করিম ফারাজী/এসআর/জিকেএস