বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ খান দুপুরের খাবার গ্রহণ করছে। তার সামনে ভাতের গামলাতে রয়েছে অসংখ্য মাছি। আর মাছি মাঝে মধ্যেই উড়ে এসে তার খাবার প্লেটে বসছে। এ অবস্থাতেই সে নির্লিপ্তভাবে খাবার খাচ্ছে। প্রশ্ন করা হলে অনেকটা উদাসীনতার সঙ্গে আসিফ উত্তর দেয় `কর্তৃপক্ষ অন্ধ, তারা দেখতে পায় না। তাই আমারা নিরুপায়, বেঁচে থাকতে হলে খেতে হবে, তাই খাচ্ছি।`তার অদূরেই রয়েছে আরেকটি টেবিল। ঝাঁকে ঝাঁকে মাছি বসে থাকার কারণে টেবিলের আসল রং বুঝা যাচ্ছে না। এসব দৃশ্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার। মানুষের পাঁচটি মৌলিক চাহিদার মধ্যে গুরুত্বপূূর্ণ একটি হচ্ছে খাদ্য। কিন্তু সে খাদ্যই শারীরিক অসুস্থের কারণ হচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঝাঁকে ঝাঁকে টয়লেটের মাছি বসা খাবার খেয়ে দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। আবার এসব খাবার রান্না হয় নোংরা, অস্বাস্থকর এবং স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে। এদিকে, যে স্থানে বসে শিক্ষার্থীরা খাবার গ্রহণ করে তাও অস্বাস্থকর।সরেজমিনে পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া সংলগ্ন পশ্চিম পাশে রয়েছে খুবই নোংরা দুর্গন্ধযুক্ত ব্যবহারের সম্পূর্ণ অনুপযোগী টয়লেট। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় পরিষ্কারের অভাবে সেসব টয়লেটের ময়লা পানি মেঝেতেও ছড়িয়ে রয়েছে। তারপরেও বাধ্য হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী ওই টয়লেটগুলো নিয়মিত ক্যাফের কর্মচারীরা ব্যবহার করছেন। সেখানেই প্রজনন হচ্ছে মাছির। আর সেই মাছিই ১০/১৫ মিটার দূরত্বের শিক্ষার্থীদের খাবারে ভাগ বসাচ্ছে। সবকিছু দেখে শুনে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় অসহায়ের মতই সেসব খাবার গ্রহণ করছে শিক্ষক-শিক্ষাথীরা।এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র শাহ আলম, ইংরেজি বিভাগের ছাত্র তারিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, আমাদের খাবারের বিকল্প কোনো পথ না থাকায় সব দেখেও, না দেখে খেতে হয়।টিএসসিসির পরিচালক ও ফলিত পুষ্টি খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের প্রফেসর ড. দিপক কুমার পাল জাগো নিউজকে জানান, খাবারে মাছি বসার কারণে সংক্রামক ব্যাধি এবং ফুড পয়জনিংয়ের মত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। ধোয়া বা স্প্রে দিয়ে মাছি মারার মত ব্যবস্থা এখানে নেই। তাছাড়া মাছি মারার জন্য কোনো কীটনাশক ব্যবহার করলে এবং সেই মাছি খাবারে বসলে শিক্ষার্থীদের ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি থাকে। টয়লেট মেরামতের বিষয়ে অনেক আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দফতরকে জানানো হয়েছে। যেহেতু তারা কোনো কাজ করেনি, তাই বিষয়টি ভিসি স্যারকে দ্রুত জানানো হবে।এআরএ/আরআইপি