রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌরসভার নির্বাচন রোববার (২০ মার্চ) অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথমবারের মত দলীয় প্রতীকে পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় এবারে ভিন্ন আমেজ সৃষ্টি হয়েছে হারাগাছ এলাকায়। এবারে হারাগাছ পৌরসভায় মেয়র পদে চারজন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৯টি ওয়ার্ডে ৩৮ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা তিনটি ওয়ার্ডে ১৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেয়র প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হাকিবুর রহমান মাস্টার, বিএনপির মোনায়েম হোসেন ফারুক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জাহিদ হোসেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান মেয়র সাদাকাত হোসন ঝন্টু। এদিকে, নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত ভোটারদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও ভোট কারচুপির আশঙ্কা করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিএনপির প্রার্থী মোনায়েম হোসেন ফারুক।শনিবার দুপুরে হারাগাছ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মোনায়েম হোসেন ফারুক অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হলে তার জয় নিশ্চিত। তবে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের ভোট কেন্দ্রে যেতে সরকার দলীয় সমর্থকরা ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছেন। ভোট কারচুপির আশঙ্কা করে তিনি বলেন, সরকার দলীয় সমর্থকরা প্রচার করছেন যে-একটি ভোট পড়লেও তাদের সমর্থিত প্রার্থীই মেয়র নির্বাচিত হবেন। তাই ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট প্রদানের পরিবেশ সৃষ্টি করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।নির্বাচনী এলাকা ঘুরে স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিড়ি শিল্পখ্যাত হারাগাছে মূলত বিড়ি মহাজন কেন্দ্রীক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিড়ি ফ্যাক্টরীর মালিকদের সমর্থনের উপর সাধারণ ভোটাররা অনেকটাই নির্ভর করেন। বর্তমানে ভোটারদের মাঝে তিন প্রার্থীকে নিয়েই বেশি আলোচনা হচ্ছে। বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য শিল্পপতি আলহাজ্ব রহিম উদ্দিন ভরসা এবং জাপার সাবেক সংসদ সদস্য করিম উদ্দিন ভরসার ভাগিনা মোনায়েম হোসেন ফারুক ধানের শীষ নিয়ে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। পাশাপাশি বর্তমান সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশির নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের হাকিবুর রহমান মাস্টার নৌকা প্রতীক নিয়ে এবং দীর্ঘদিন শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত থাকায় তারও জনপ্রিয়তা রয়েছে অনেকটাই। অপরদিকে, বর্তমান মেয়র সাদাকাত হোসেন ঝন্টু মোবাইল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গত মেয়াদে এলাকার সার্বিক উন্নয়নের বার্তা নিয়ে তিনিও ছুটছেন ভোটারের দ্বারে দ্বারে। মূলত এই তিন হেভিওয়েট প্রার্থীর মধ্যেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা। শেষ পর্যন্ত কার গলায় বিজয়ের মালা উঠবে তা নিশ্চিত করে বলা না গেলেও লড়াইটা হাড্ডাহাড্ডি হবেই বলে মনে করছেন তারা।জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র মতে, হারাগাছ পৌরসভায় মোট ভোটার ৪৬ হাজার ২০৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২২ হাজার ২৮৭ এবং নারী ভোটার রয়েছেন ২৩ হাজার ৯১৮ জন। মোট ২০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।হারাগাছ পৌর নির্বাচনে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে জানিয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব উদ্দিন জাগো নিউজকে জানান, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপশি স্টাইকিং ফোর্স ও ভ্রাম্যমাণ আদালত সার্বক্ষণিক নির্বাচনী এলাকা পর্যবেক্ষণ করবেন। কেউ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে চাইলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জিতু কবীর/এআরএ/এবিএস