দেশজুড়ে

২২ সড়কে ৮ কোটি টাকার ক্ষতি

ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম এলাকার মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। প্লাবিত হওয়া ২০টি গ্রাম থেকে পানি নেমে যাওয়ার পরপরই দৃশ্যমান হতে থাকে ক্ষত চিহ্ন।

এরই মধ্যে সরকারি দপ্তর থেকে ক্ষয়ক্ষতির একটি প্রাথমিক তথ্য বিবরণী তৈরি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, দুই উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের ২৭ কিলোমিটার সড়ক ভেঙে ৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

আরও পড়ুন: বাঁধের ভাঙন আর মেরামতের বৃত্তে তাদের জীবন

ফেনীর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহমুদ আল ফারুক বলেন, বন্যার পানির চাপে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় অন্তত ২৭ কিলোমিটার পাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা সংস্কার করতে অন্তত ৮ কোটি টাকার প্রয়োজন। এরমধ্যে ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়ন ও আমজাদ হাট ইউনিয়নের ৯টি সড়কের ১০ দশমিক ৪৪ কিলোমিটার মেরামতের জন্য সম্ভাব্য ৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয় হতে পারে। এছাড়া পরশুরাম উপজেলার ১৩টি সড়কের ১৬ দশমিক ৮০ কিলোমিটার মেরামতে প্রায় ৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয় হতে পারে বলে উপজেলা প্রকৌশলীরা মাঠ পর্যায়ে সার্ভে করে জানিয়েছেন। পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার ২২টি সড়ক জরুরি ভিত্তিতে মেরামতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা যায়, আগস্ট মাসের শুরু থেকে টানা বর্ষণের কারণে মুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। এক পর্যায়ে ৭ আগস্ট ভোরে ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের উত্তর বরইয়া এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে প্রবল বেগে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে থাকে। সকাল ১০টার দিকে একই ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর এলাকায় আরেকটি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এতে আশপাশের অন্তত ১৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়।

আরও পড়ুন: পানি নামার সঙ্গে জেগে উঠছে ক্ষত

একই দিন সন্ধ্যার দিকে পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম আলকা গ্রামে বেড়িবাঁধে আরও একটি ভাঙন দেখা দেয়। এতে ওই উপজেলার চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়। প্লাবিত এলাকায় নদীর পানি ঢুকে রাস্তাঘাট, ফসলি জমি, খামার, দোকান-পাট, হাটবাজার, পুকুরসহ সব কিছু ডুবিয়ে দেয়। পানির প্রবল চাপে কোনো মানুষের প্রাণহানি না ঘটলেও রাস্তাঘাট, মাছ ও হাঁস-মুরগি ও আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

ফুলগাজীর পূর্ব ঘনিয়ামোড়ার বাসিন্দা কামরুল ইসলাম বলেন, বন্যার পানির চাপে পূর্ব ঘনিয়া মোড়া যাতায়াতের প্রধান সড়কসহ আশপাশের অনেক রাস্তার পিচ উঠে গেছে। বড় বড় গর্তের কারণে এখন এসব রাস্তায় চলাচল করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। রাস্তাগুলো দ্রুত মেরামত না করলে জনসাধারণের দুর্ভোগ আরও বাড়তে পারে।

ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের বরইয়া গ্রামের মাধু মিয়া বলেন, বন্যায় অনেক রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, সম্প্রতি সময়ে বন্যায় ফেনীতে প্রাপ্ত ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বি-ফর্মে প্রতিবেদন তৈরি করে প্রেরণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আবদুল্লাহ আল-মামুন/এসজে/এমএস