নওগাঁয় ঊর্ধ্বমুখী পেঁয়াজের বাজার। কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত। এদিকে কাঁচা মরিচ ও বেগুনের দামও বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে দিশেহারা ক্রেতারা।
তাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের উচিত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। তা নাহলে আগামীতে আরও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর শুল্ক বসানোর প্রভাবে বাজারে বেড়েছে দাম। আগামীতে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়বে।
নওগাঁ পৌরশহরের পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি পর্যায়ে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা। চার-পাঁচ দিন আগেও দেশি পেঁয়াজ ৭০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। তবে খুচরা পর্যায়ে দেশী পেঁয়াজ ৮৫ ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে খুচরা বাজরে কাঁচা মরিচ ২৪০ টাকা ও বেগুন ৪০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। গাজর ২০০ টাকায় ও সজনে ২৪০ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ১৬০ টাকা কেজি গাজর ও ২০০ টাকা কেজিতে সজনে বিক্রি হয়। তবে অপরিবর্তিত আছে বিভিন্ন সবজির দাম।
পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা ক্রেতা ইসমাইল হোসেন বলেন, পাঁচ দিন আগেও ভারতীয় পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজি কিনে নিয়ে গেলাম। আজকে আবার সেই পেঁয়াজ ৫৫ টাকা কেজি চাচ্ছে। হঠাৎ বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। প্রশাসনের বাজার মনিটরিং জোরদার করা উচিত। তা না হলে আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। কারণ পিঁয়াজ নিত্যপ্রয়োজনীয় একটি পণ্য।
খুচরা বাজারে কথা হয় মামুনুর রহমান নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি বলেন, বেগুন ও কাঁচা মরিচে কয়েকদিনের ব্যবধানে কেজিতে ৪০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। এমনিতেই বাজারে সব জিনিসপত্রের দাম বেশি। এভাবে দাম আরও বাড়তে থাকলে আগামীতে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে।
নওগাঁ পৌর পাইকারি বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, শুল্ক নির্ধারণের আগে ভারতীয় পেঁয়াজ পাইকারি প্রতি কেজি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু পেঁয়াজ রফতানিতে ভারত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। এ কারণে পিঁয়াজের দাম বেড়েছে। পেঁয়াজের দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে দাম বাড়ছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজারে পেঁয়াজের সিন্ডিকেটের কোনো সুযোগ নেই। কারণ পেঁয়াজ বেশি দিন মজুত করা যায় না। মজুত করলে তা পচে নষ্ট হয়ে যায়।
খুচরা সবজি ব্যবসায়ী মো. রাশেদ বলেন, বেগুন ও কাঁচা মরিচ ছাড়া সব ধরনের সবজির দাম গত এক সপ্তাহের মধ্যে স্থিতিশীল আছে।
বেগুন ও কাঁচা মরিচের দাম বাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, অতিরিক্ত খরা ও বৃষ্টির কারণে গাছ পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে উৎপাদন কম হচ্ছে। এছাড়া বাইরের ব্যবসায়ীরা নওগাঁ থেকে কাঁচা মরিচ ও বেগুন কিনে নিয়ে যায়। তাই বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
নওগাঁ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক রুবেল আহমেদ বলেন, আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করে থাকি, যেন কোনো বিক্রেতা নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্য না নেয়। কোনো অজুহাতে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বেশি রাখলে জরিমানা করা হচ্ছে।
এসজে/জিকেএস