দেশজুড়ে

গৃহবধূর মাথা ন্যাড়া করে ঘোল ঢালার ঘটনায় গ্রেফতার ৩

নওগাঁর বদলগাছীতে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ তুলে গ্রাম্য মাতবরের সিদ্ধান্তে গৃহবধূর মাথা ন্যাড়া করে ঘোল ঢেলে ‘শুদ্ধ’ করার ঘটনায় মামলার পর অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সোমবার (২৮ আগস্ট) রাতে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। মামলার পর রাতেই বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তিন আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গ্রেফতাররা হলেন উপজেলার বাঁশপাড়া এলাকার অভিযুক্ত গ্রাম্য মাতবর বিমল পাহান (৩৮), সুবাস পাহান (৪৫) ও ধামইরহাটের ইনসিরা গ্রামের ভবেশ পাহান (৫২)। মামলার আরও দুই আসামি রঞ্জনা রাণী ও শংকরি পলাতক আছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ওই গৃহবধূকে পরকীয়ায় অপবাদ দিয়ে গ্রামে সালিশের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ঘটনাটি গৃহবধূর মা জানতে পেরে ১৫ দিন আগে জামাইয়ের বাড়িতে এসে মেয়েকে নিয়ে চলে যান। এরপর গত ২৬ আগস্ট গৃহবধূর শাশুড়ি ওই গৃহবধূকে বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর গ্রামের মাতবররা ওই নারীকে পরকীয়ার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সমাজচ্যুত করার পরিকল্পনা করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকাল ৯টার দিকে মাতবররা দলবদ্ধ হয়ে ওই গৃহবধূর বাড়িতে আসেন। কিছুক্ষণ পর গ্রামের মাতবর আসামি বিমল পাহানের হুকুমে সুবাশ, রঞ্জনা, শংকরিসহ কয়েকজন জোর করে ওই গৃহবধূর মাথা ন্যাড়া করে ঘোল ঢেলে দেন। এরপর আসামিরা তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চলে যান।

ভুক্তভোগী গৃহবধূ বলেন, আমার কারও সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক নেই। সমাজ থেকে আলাদা করা এবং সামাজিকভাবে হেয় করার জন্যই তারা আমার সঙ্গে এই কাজ করেছে। সবার কাছে আমাকে অপমান করা হয়েছে। আমি অপরাধীদের শাস্তি চাই।

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আতিয়ার তিন আসামিকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ঘটনার পর ভুক্তভোগী বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। মামলার পর আত্মগোপনে থানা আসামি বিমলকে বদলগাছীর জাবারীপুর এলাকা থেকে, সুবাসকে গয়েশপুর এলাকা থেকে এবং ভবেশকে ধামইরহাট উপজেলার ইসবপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গ্রেফতারদের আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এমআরআর/এমএস