গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সাবেক প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) নুরুন্নবী সরকারের দায়ের করা মানহানির দুই মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এতে চার সাংবাদিকসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজু আহাম্মেদের আদালতে এই অভিযোগ গঠনের আদেশ দেওয়া হয়।
অভিযুক্তরা হলেন, যমুনা টেলিভিশনের গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি জিল্লুর রহমান পলাশ, কালের কণ্ঠের শেখ মামুন-উর রশিদ, স্থানীয় সাংবাদিক আবু জায়েদ কারী (চাঁদনী বাজার), একেএম সামছুল হক (ভোরের দর্পণ) ও মানবাধিকারকর্মী মাহাবুর রহমান।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ফরহাদ হোসেন লিটু বলেন, গত বছরের ১৬ জানুয়ারি মামলা দুটির অভিযোগ গঠন ও বিবাদী সাংবাদিকদের অব্যাহতির (ডিসচার্জ) বিষয়ে আবেদন করা হয়। এরপর দেড় বছরে ৯ কার্যদিবস অতিবাহিত হলেও আদেশ দেননি আদালত। অবশেষে উভয় পক্ষের শুনানির পর ৫ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন আদালত। একইসঙ্গে মামলার বিচার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আগামী ৬ নভেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
তিনি আরও জানান, আদালতের এই আদেশের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে রিভিশন মামলা দায়ের করা হবে। এই মিথ্যা মামলা থেকে সাংবাদিকদের অব্যাহতির জন্য প্রয়োজনে আমরা উচ্চ আদালতে যাবো।
২০১৫ সালে যোগদানের পর সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় টানা পাঁচ বছরের চাকরিতে দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করেন পিআইও নুরুন্নবী সরকার। ঘুষ-দুর্নীতির দায়ে তার বিরুদ্ধে দুদকেরসহ পাঁচটি মামলা হয় সুন্দরগঞ্জ থানায়। নুরুন্নবী সরকারের ঘুষ বাণিজ্য ও দুর্নীতি কর্মকাণ্ড নিয়ে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একাধিক সচিত্র প্রতিবেদন প্রচার হয় যমুনা টেলিভিশন ও কালের কণ্ঠসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে। এ নিয়ে ওই বছরের ১৫ অক্টোবর রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোতোয়ালি আমলি আদালতে মানহানির পৃথক দুটি মামলা করেন পিআইও নুরুন্নবী।
এদিকে গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশের পর তদন্তে আর্থিক দুর্নীতি ও অসদাচরণসহ অনিয়মের প্রমাণ মেলে নুরুন্নবী সরকারের বিরুদ্ধে। এনিয়ে বেতনগ্রেড পদাবনতিসহ তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় দুটি মামলা ও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বর্তমানে নুরুন্নবী সরকার দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় পিআইও হিসেবে কর্মরত।
শামীম সরকার শাহীন/এফএ/জিকেএস