দেশজুড়ে

আদালতের সামনে থেকে আ’লীগ নেতাকে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়

নরসিংদীতে শাহিন মিয়া নামে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে আদালতের সামনে থেকে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শাহিন মিয়া। তিনি নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক।

আলোকবালী ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি সদস্য হাবিব মিয়া (৪২) ও একই এলাকার আব্দুর রউফের ছেলে মিটল মিয়ার (৪০) বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করা হয়। এর আগে রোববার দুপুরে নরসিংদী আদালতের ৩ নম্বর গেটের সামনে থেকে তাকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তদের সঙ্গে রাজনৈতিক ও আধিপত্য নিয়ে শাহিন মিয়ার দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। রোববার দুপুর দেড়টার দিকে আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আসাদ উল্লাহর চেম্বার থেকে বের হন তিনি। পরে নরসিংদী আদালতের ৩ নম্বর গেটের সামনে পৌঁছালে শাহিন মিয়াসহ একই এলাকার রাহীমকে সাত-আটজন ব্যক্তি দুইটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে মারধর করেন। তাদের মারধর করার সময় অপহরণকারীরা বারবার প্রতিপক্ষ হাবিব মিয়া ও মিটল মিয়ার নাম বলতে থাকেন।

তাদের দাবি ছিল, শাহিন মিয়াকে হত্যা করার জন্য এক লাখ টাকায় চুক্তি করেছে প্রতিপক্ষ। এখন বাঁচতে চাইলে তাদের দেড় লাখ টাকা দিতে হবে। প্রাণ ভয়ে বিকাশে অপহরণকারীদের ৭১ হাজার টাকা দেন শাহিন। পরে তাদের বিভিন্ন হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নরসিংদী জজ আদালতের আইনজীবী আসাদ উল্লাহ বলেন, আইনি সেবা নিতে শাহীন মিয়া আমার চেম্বারে এসেছিলেন। ফেরার পথে তাকে জিম্মি করে তুলে নেওয়া হয়। পরে তাকে দুই ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করে টাকা পেয়ে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত আসামিদের খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

তবে অভিযুক্ত মিটল মিয়া বলেন, আমাকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্য মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি যদি অপহরণ করাতাম তাহলে অপহরণকারীরা কি আমার নাম বলতো? আমার স্ত্রী ইউনিয়নের প্যানেল মেয়র। আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক কারণে পক্ষ-বিপক্ষ আছে কিন্তু কোনো বিরোধ নেই। আমি চাই তদন্ত সাপেক্ষে প্রশাসন যেন প্রকৃত ঘটনা বের করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইজনকে থানায় নিয়ে এসেছি। রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।

সঞ্জিত সাহা/এমআরআর/এমএস