দেশজুড়ে

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ভাইয়ের হাত-পা বাঁধা ছবি ফেসবুকে দিলেন যুবক

সিলেটের জৈন্তাপুরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ছোটভাইয়ের হাত-পা বাঁধা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দিয়েছেন এক যুবক। তদন্তে নেমে পুলিশ জানাতে পারে, বিষয়টি পরিকল্পিত।

Advertisement

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) জাগো নিউজকে বিষটি নিশ্চিত করেছেন জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ঘটনার আগের রাতে এক চোরাকারবারির সঙ্গে মারামারি হয়। ওই ব্যক্তিকে ফাঁসাতে নিজের ভাই উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের গোয়াবাড়ির বাসিন্দা সালমান আহমদের হাত-পা বাঁধা ছবি ফেসবুকে দেন তারই বড় ভাই সেবুল আহমদ (২৮)।

ওসি আরও বলেন, ঘটনার সময় সালমান অচেতন ছিলেন। তার ভাই প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন। অভিযুক্ত সেবুল এখন পলাতক আছেন। তাকে গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে জৈন্তাপুরের গোয়াবাড়িতে বিজিবি সদস্যদের একটি দল টহলে যায়। এ সময় এলাকার কয়েকজন যুবক অভিযোগ তোলেন- গোয়াবাড়ি এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৮৫ নম্বর ঘরের বাসিন্দা সালমান আহমদ (২৩) এলাকায় চোরাচালানের খবর বিজিবিকে জানায়। ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিষয়টি নিয়ে জুবেল মিয়া, লিলু মিয়া ও অলি মিয়াদের সঙ্গে সেবুল ও সালমানের বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় সালমান ও তার বড় ভাই সেবুল আহমদ প্রতিপক্ষের মারধরের শিকার হন।

এ ঘটনার পর সেবুল স্থানীয় পাঁচ যুবকের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দেন। এরপর সালমানকে হাত-পা বাঁধা ও মেঝেতে ফেলে রাখা একটি ছবি ফেসবুকে ছেড়ে উল্লেখ করা হয়- চোরাকারবারি সিন্ডিকেট টর্চার সেলে নিয়ে সালমানকে মারধর করা হচ্ছে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, সালমান ও সেবুল দুইভাই একটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সোর্স হিসেবে এলাকায় পরিচিত। যারা সেদিন তাকে ও তার ভাইকে মারধর করেছেন একই এলাকার জুবেল মিয়া, লিলু মিয়া ও অলি মিয়া। তারাও ওই বাহিনীর সোর্স। এরা একসময় একই সঙ্গে চলতেন। পূর্ব বিরোধের জেরে তাদের মধ্যে মারামারি ঘটে।

ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, ওই ছবি ফেসবুকে ছড়ানোর ঘটনায় প্রথমে সালমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার কথায় অসংলগ্নতা পাওয়া যায়। একপর্যায়ে ছবির ঘরের মেঝের সঙ্গে সালমানের ঘরের মেঝে মিলে যায়। ঘর তল্লাশি করে হাত-পা বাঁধার দড়িও পায় পুলিশ। পরে তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত হয় টর্চার সেলে নির্যাতনের অভিযোগ এনে ছাড়ানো ছবিটি সালমানের ঘরেই ধারণ করা হয়েছে। বিষয়টি সাজানো।

Advertisement

একপর্যায়ে বিষয়টি স্বীকারও করেন সালমান। তবে তিনি বলেন- ঘটনার সময় তিনি অচেতন ছিলেন। কে বা কারা ছবি ধারণ করেছে, সেটি তিনি জানেন না।

ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে- ঘটনাটি সালমানের ভাই সেবুল ঘটিয়েছেন। তবে তিনি পালিয়ে গেছেন। তাকে ধরতে চেষ্টা করছে পুলিশ।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সেবুল মিয়ার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। আর ঘটনার পর থেকে হামলাকারী জুবেল মিয়া, লিলু মিয়া ও অলি মিয়াও পলাতক আছেন।

ছামির মাহমুদ/এসজে/জেআইএম