ভারতের উত্তর সিকিমে প্রবল বৃষ্টিপাতে উজানে বাঁধ ভাঙায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। তবে বর্তমানে তা কমতে শুরু করেছে। আর পানি কমায় তিস্তা নদীতে মাছ ধরার ধুম লেগেছে। জালে ধরা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকাল থেকেই দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের উজানে মাছ ধরতে দেখা যায় জেলে ও নদীপাড়ের বাসিন্দাদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে তিস্তার উজানে সৃষ্ট চরের পাশে হাঁটু-কোমর পানিতে নানান জাল দিয়ে মাছ শিকারের ধুম লেগেছে। কেউ জীবিকার তাগিদে আবার কেউ শখের বসে মাছ ধরতে নদীতে নেমেছেন। পরিবারের অন্যদের সঙ্গে মাছ ধরতে ব্যস্ত শিশু-কিশোররাও। জালে ধরা পড়েছে বৈরালী, বোয়াল, আইড়, গুলশা, টেংরা, কালিবাউশ, পুঁটি, টাকিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে নদীতেই মাছ বিক্রি করছেন কেউ কেউ।
মাছ ধরতে আসা কয়েকজন জানান, তিস্তায় বৈরালি ছাড়াও ধরা পড়ছে বোয়াল, বাগাড়, আইড়, কালিবাউশ, রিঠাসহ নানা প্রজাতির মাছ। আর এসব মাছ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। নদীর পাড় থেকে মাছ ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা সরাসরি এসব মাছ সংগ্রহ করছেন।
মাছ শিকারে আসা সফিকুল ইসলাম বলেন, সবার কাছে শুনলাম তিস্তায় বন্যায় প্রচুর মাছ পাওয়া যাচ্ছে। তাই আমিও আসছি। আমি যা মাছ পেয়েছি তা আমার পরিবারের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট।
মনজুরুল ইসলাম নামে আরেক মাছ শিকারি বলেন, এখন আর আগের মতো মাছ নেই। তিস্তায় পানি বাড়ার কারণে মাছ পাওয়া যাচ্ছে। আমি দুইদিনে ১৫ কেজি মাছ পেয়েছি।
মাছ ক্রেতা সেকেন্দার আলী জানান, শুনেছি তিস্তার মাছের অনেক স্বাদ। সরাসরি নদী থেকে মাছ কিনতে পাচ্ছি। পাঁচশো টাকা কেজি দরে সাড়ে চার কেজি ওজনের একটা আইড় মাছ কিনেছি।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নুরুল ইসলাম বলেন, দুপুর ১২টায় ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৪৭ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। তবে আজ সন্ধ্যার পর তিস্তায় পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-ই-আলম সিদ্দিকী জাগো নিউজকে বলেন, বন্যা সতর্কতায় তিস্তা এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। বিভিন্ন মসজিদের মাইকে প্রচারণা চলছে। বন্যা কবলিত দুর্গত এলাকা পরিদর্শনও করেছি। এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ পাওয়া যায়নি।
নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ জাগো নিউজকে বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৩০ মেট্রিক টন চাল ও ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর বাইরেও প্রয়োজনীয় ত্রাণ মজুত আছে।
এফএ/জেআইএম