দেশজুড়ে

ঘূর্ণিঝড়ে সর্বস্ব হারিয়ে দু’দিন ধরে খোলা আকাশের নিচে হোসনেয়ারা

ফরিদপুরের সালথায় ঘূর্ণিঝড়ে মাথা গোজার ঠাঁই হারিয়ে দু’দিন ধরে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন অসহায় হোসনেয়ারা বেগম (৪৫)। কিন্তু গত দু’দিনে কোনো সাহায্য-সহযোগিতাতো দূরে থাক কেউ কোনো খোঁজও নেননি তার।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে আকস্মিক ঘূর্ণিঝড় কেড়ে নেয় তার একমাত্র সম্বল মাথা গোজার ঠাঁই। এরপর থেকেই তিনি কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে খোলা আকাশের নিচে জীবনযাপন করছেন।

স্থানীয় ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, হোসনেয়ারা বেগম উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের সোনাতুন্দী চর পাড়া গ্রামের মৃত রায়েব আলী মোল্লার স্ত্রী। ঝড়ের আঘাতে নারকেল গাছ তার ঘরের ওপর পড়লে তিনি ঘর থেকে দৌড়ে বের হয়ে জীবন বাঁচান। এ সময় সময় বাম হাতে প্রচণ্ড ব্যথাও পান তিনি। ঝড়ে ঘরটি পুরো বিধ্বস্ত হয়ে বৃষ্টিতে ঘরের প্রায় সব মালামাল ও খাবার নষ্ট হয়ে গেছে।

হোসনেয়ারা বেগম বলেন, আমার স্বামী ছোট ছোট ৪টি বাচ্চা রেখে অনেক আগে মারা গেছেন। অনেক কষ্ট করে মানুষের বাড়িতে কাজ করে সংসার চলে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘূর্ণিঝড়ে আমার ঘরের ওপর নারিকেল গাছ পড়ে একমাত্র থাকার ঘরটি ভেঙে গেছে। তারপর থেকে খোলা আকাশের নিচে দিন-রাত পার করছি। ভাঙা ঘর মেরামত করবো সেই টাকাও আমার কাছে নেই। এ পর্যন্ত সরকারি কোনো সাহায্য সহযোগিতাও পাইনি। তবে হালিম নামে একজন কিছু চাল-ডাল-তেল, নুন দিয়ে গেছেন তাই খেয়ে দুই দিন আছি।

তিনি আরও বলেন, তালিকাতেও আমার নাম দেওয়া হয়নি। চেয়ারম্যান সাহেবের কাছে গিয়েও অনুনয় বিনয় করে এসেছি। তিনি আমাকে বলেছেন চরপাড়ায় কোনো বাজেট নেই। তারপরও তাকে বলে এসেছি আপনি আমার বিষয়টি একটু মাথায় রাইখেন। আমার এই ঘর মেরামত করার জন্য আমি সকলের নিকট সহযোগিতা কামনা করছি। আমি ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কোথায় থাকবো, কী করবো, কী খাবো এ চিন্তায় আছি।

এ ব্যাপারে বল্লভদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুর রহমান শাহিন বলেন, গ্রামের একপাশে হওয়ায় ওই নারীর বাড়ি কারো চোখে পড়েনি। পরে জানতে পেরে খোঁজ খবর নিয়েছি। তাকে ঘর তোলার জন্যও সহায়তা করা হবে।

এ বিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিচুর রহমান বালী বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না, বল্লভদী ইউপি চেয়ারম্যান ও গ্রাম পুলিশের সঙ্গে কথা বলে যাচাই করে বিস্তারিত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এফএ/জেআইএম