চুয়াডাঙ্গায় একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তাসলিমা খাতুন (২৫) নামের এক নারী। এদের মধ্যে তিনটি কন্যা ও একটি ছেলে সন্তান। জন্মের একঘণ্টা পর ছেলেটি মারা যায়। তিন মেয়ের নাম রেখেছেন পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে তাসলিমা খাতুন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে স্বাভাবিকভাবে (নরমাল ডেলিভারি) চার সন্তানের জন্ম দেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আকলিমা খাতুন বলেন, সকালে প্রসূতি হাসপাতালে আসেন। প্রসবব্যথা ওঠলে ১ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কোনো অপারেশন ছাড়া ডেলিভারি সম্পন্ন করি। চার বাচ্চার তিনজনই বেশ সুস্থ আছে। একটা বাচ্চা মারা গেছে। প্রসূতির রক্তরক্ষণ হচ্ছে। আমি ও আমার টিম পরিশ্রম করেছে বলে সফল নরমাল ডেলিভারি করা সম্ভব হয়েছে। এ রোগীটি এর আগে সিজারিয়ানের মাধ্যমে একটা ছেলে সন্তান জন্ম দিয়েছিলেন।
একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম হওয়ায় যেমন খুশি হলেও তাদের ভরণপোষণ নিয়ে চিন্তায় আছেন তাদের বাবা ইমরান হোসেন। ইমরান হোসেন ব্যটারিচালিত ভ্যানচালক। তিনি ঝিনাইদহের গাড়াগঞ্জের বাসিন্দা হলেও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের রাজাপুরে বসবাস করেন।
আরও পড়ুন: একসঙ্গে চার সন্তান জন্ম দিলেন প্রবাসীর স্ত্রী
তাসলিমা খাতুন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মন্টু মিয়ার মেয়ে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন বলেন, চার সন্তানের জন্ম হলেও ছেলেটি মারা গেছে। তবে তিন কন্যাসন্তান আমার তত্ত্বাবধানে রয়েছে। তারা কিছুটা অপুষ্টিতে ভুগছেন। তাদের মায়ের শারীরিক অবস্থা বেশ ভালো।
এ বিষয়ে ইমরান হোসেন বলেন, আমাদের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। চার সন্তান জন্ম নেওয়ায় আমি খুব খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু এরমধ্যে ছেলে সন্তানটি মারা গেছে। তবে আমার তিন কন্যা সন্তান বেঁচে আছে। কন্যাদের মুখ দেখে আমার বুক ভরে গেছে। ইউএনও স্যার আর ভাইস চেয়ারম্যান আমাকে সাহায্য করছেন। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম ভুঁইয়া বলেন, একসঙ্গে চার শিশুর জন্মের খবর পেয়ে আমরা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে দেখতে এসেছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে মিষ্টিমুখ করানো হয়েছে। সেই সঙ্গে আমরা নবজাতকদের যাবতীয় চিকিৎসা খরচ বহনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। এসময় শিশুদের পরিবারের অনুরোধে তাদের যথাক্রমে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা নামকরণ করা হয়।
হুসাইন মালিক/আরএইচ/এএসএম