কুড়িগ্রাম সদের শতাধিক নারী-পুরুষ নিয়ে দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। খেলা দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় জমান।
রোববার (১২ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নে ডাক্তারপাড়া গ্রামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে খেলায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
সকাল থেকেই বেশ কৌতূহল নিয়ে ডাক্তারপাড়া গ্রামে ভিড় জমায় উৎসুক জনতা। শিশু-কিশোর থেকে বৃদ্ধ বয়সী মানুষের আগমনে মিলনমেলায় পরিণত হয় অনুষ্ঠানটি। এসব খেলা দেখতে এলাকার সব বয়সী মানুষের অংশগ্রহণে সৃষ্টি হয় এক আনন্দঘন পরিবেশ। কিছুক্ষণের জন্য অনেকে যেন নিজের বয়স ভুলে ফিরে যান অতীতে কিংবা শৈশবে।
গ্রামীণ খেলাধুলার মধ্যে ছিল বিস্কুট দৌড়, হাঁড়িভাঙা, বালিশ খেলা, সুঁই সুতা, সাঁতার, চোখ বেঁধে হাঁস ধরা, তৈলাক্ত কলা গাছ বেয়ে চড়া, পানিতে বালিশ খেলা ও যেমন খুশি তেমন সাজ। সব বয়সের শতাধিক নারী পুরুষ ৯টি খেলায় অংশ নেন। এদের মধ্যে বিজয়ী ৩০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ও সরকারি কৌঁসুলি এস এম আব্রাহাম লিংকন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, জেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি সাঈদ হাসান লোবান, কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান মাসুদ, কুড়িগ্রাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক তরুণ কুমার রায়, বেলগাছা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. লিটন মিয়া
খেলা দেখতে আসা মো. আব্দুল হাই বলেন, এসব খেলা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ১০-১৫ বছর পর গ্রামের অতীত খেলা দেখে খুবই আনন্দ পেলাম।
শিক্ষার্থী মো. নুর মামুন জানায়, টিভিতে মাঝে মধ্যে এসব খেলা দেখি। আজ সচোখে দেখে খুব মজা করছি। নতুন প্রজন্মের জন্য এসব খেলা অব্যাহত রাখা উচিত।
দুর্বার তারুণ্য বাংলাদেশের সভাপতি রেজওয়ানুল হক নুরনবী বলেন, গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানাতে এ খেলার আয়োজন করা হয়েছে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আহ্বায়ক শ্যামল ভৌমিক বলেন, কালের বিবর্তনে গ্রামীণ খেলাধুলা হারিয়ে যাচ্ছে। আধুনিক যুগে মোবাইল ইন্টারনেটের কারণে এসব খেলা থেকে মানুষজন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। সরকার ও সচেতন মহলের উচিত গ্রামীণ খেলাধুলাকে বাঁচিয়ে রাখতে সুদৃষ্টি রাখা।
ফজলুল করিম ফারাজী/এসজে/এএসএম