গাইবান্ধায় জেঁকে বসেছে শীত। কনকনে হাওয়ার দাপটে জবুথবু হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। কুয়াশার কারণে রোদের দেখা নেই। প্রতিদিন কমছে তাপমাত্রা। গরম কাপড়ের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে নদ-নদী তীরবর্তী চর ও দ্বীপ চরের বাসিন্দারা। ঘনকুয়াশা উপেক্ষা করে দিনের বেলাতেও হেড লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলতে দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় গাইবান্ধায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা ২৪ ঘণ্টা আগেও ছিল ১৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এভাবে প্রতিদিন নেমে আসছে জেলার তাপমাত্রার পারদ।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে ১৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড
গত ১০ দিন ধরে বিকেলের পর থেকে পরদিন দুপুর পর্যন্ত কুয়াশায় ঢেকে থাকে গোটা জনপদ। নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে জেলায় শীত অনুভূত হচ্ছে। ধীরে ধীরে এর তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে গত এক সপ্তাহ থেকে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে।
শীত নিবারণের জন্য মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করলেও নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া ও শ্রমজীবী শীতবস্ত্র নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে।
এদিকে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগীর সংখ্যা। জেলা সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ক্লিনিকগুলোতে শীতজনিত রোগ নিয়ে শিশু ও বয়স্ক রোগীরা বেশি আসছে। এদের মধ্যে মধ্যে সর্দি, কাশি, জ্বর ও অ্যাজমায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আইয়ুব আলী বলেন, কয়েকদিন প্রচুর শীত। ক্ষেতে সবজি লাগাইছি। এরকম শীত থাকলে সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাবে।
হরিপুর ইউনিয়নের চর চরিতাবাড়ি গ্রামের আনছার আলী বলেন, শীতে অবস্থা খুব কাহিল। এরকম ঠাণ্ডা ও শীত হলে আমার মতো বয়স্ক মানুষগুলোর খুব সমস্যা। এমনিতেই অসুখে চলতে পারি না।
কাপাসিয়া ইউনিয়নের কাজিয়ার চরের আলম মিয়া বলেন, তিনদিন থেকে খুব ঠান্ডা ও কুয়াশা। ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। আমাদের চরে তো সবসময় বাতাস থাকে তাই খুব ঠান্ডা। বাড়ি থেকে বাহির হওয়া যাচ্ছে না। গতকালও সারাদিন কুয়াশায় ঢাকা ছিল আমাদের এলাকা। আজ কুয়াশা আরও বেশি।
ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালক আব্দুল ওয়াহাব বলেন, শীতের কারণে রাতের বেলা গাড়ি চালানো যায় না। শীতে কিছু দেখা যায় না। আলো একেবারে কমে যায়। দুদিন থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত লাইট জ্বালিয়ে অটো চালাতে হয়।
রংপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিদিনই গাইবান্ধার তাপমাত্রা কমে আসছে। সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা আগামীতে আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
জিএসএইচএসশামীম সরকার শাহীন/আরএইচ