দেশজুড়ে

চুয়াডাঙ্গায় নৌকা প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন, এসআইকে প্রত্যাহার দাবি

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আহম্মেদ হাসানুজ্জামান মানিকের গ্রেফতারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগ।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন।

সংবাদ সম্মেলনে চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) হারুন-অর-রশিদকে অবিলম্বে প্রত্যাহার এবং পদ্মবিলা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের বিশ্বাসকে অবিলম্বে গ্রেফতার ও তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

লিখিত বক্তব্যে সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন বলেন, কয়েকদিন ধরে চুয়াডাঙ্গা সদরের শংকরচন্দ্র ও পদ্মবিলা ইউনিয়ন এলাকায় একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর (ঈগল প্রতীকের প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা) কর্মীরা নৌকা মার্কার প্রার্থীর বিরুদ্ধে সরাসরি নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করে অপপ্রচার, কুৎসা রটনা ও নৌকার প্রার্থীর নামে ব্যক্তিগতভাবে গালাগালি করে উত্তেজনা ছড়াচ্ছিলেন। এ ঘটনায় সরোজগঞ্জ পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই হারুন-অর-রশিদ তার সঙ্গে যোগ দিয়ে এবং স্থানীয় জামায়াত-বিএনপির কিছু লোকজনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ, ভন্ডুল করার একটি গোপন নকশা নিয়ে কাজ করছেন।

২৩ ডিসেম্বরের ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে ছেলুন জোয়ার্দ্দার বলেন, সেদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় যুবলীগের একটি মিছিলে হামলা চালানো হয় এবং নৌকার প্রার্থীকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও উত্তেজনা ছড়ানো হয়। রাত ৮টার দিকে ভান্ডারদহ গ্রামে নৌকার পক্ষে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলের পেছনে ঈগল মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী তার ব্যক্তিগত বডিগার্ড ও কয়েকজন কর্মী-সমর্থকসহ গাড়ি নিয়ে উপস্থিত হন। প্রার্থীর সমর্থক পদ্মবিলা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের বিশ্বাস একটি হ্যান্ডমাইক দিয়ে মিছিলের পেছন থেকে গালাগালি করতে থাকেন। রাস্তা ফাঁকা হলে গাড়িবহরটি কিছুদূর গিয়ে ভান্ডারদহ ত্রিমোহনী মোড়ে পৌঁছে রাস্তায় মাইকে বক্তৃতা দিতে শুরু করেন ওই প্রার্থী। এতে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে নৌকার প্রার্থী ছেলুন জোয়ার্দ্দার বলেন, ঘটনার সময় সেখানে সরোজগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি থেকে এসআই হারুন-অর-রশিদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য উপস্থিত হয়। তখন স্বতন্ত্র প্রার্থী অকথ্য ভাষায় পুলিশ সদস্যদের আমাদের কর্মীদের আক্রমণ করার নির্দেশ দেন। পরে মিছিলে হামলা চালানো হয়। এতে অনেকে আহত হন এবং মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। সেখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী আহম্মেদ হাসানুজ্জামান মানিক গেলে তাকেসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, অ্যাডভোকেট মুহা. শামসুজ্জোহা, সাবেক দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু তালেব বিশ্বাস, জেলা কৃষকলীগের সাব্কে সভাপতি আজিজুল হক ও চুয়াডাঙ্গা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম শাহান প্রমুখ।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সদর উপজেলার নতুন ভান্ডারদহ এলাকায় ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালার প্রচারণায় বাধা, গাড়িবহর গতিরোধ করে প্রার্থীকে লাঞ্ছিত ও অস্ত্র প্রদর্শন করে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় রাত সোয়া ৩টায় সদর থানায় স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমারকে হত্যাচেষ্টায় ২১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়।

মামলায় পুলিশ আটক পাঁচজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোর্পদ করে। রোববার (২৪ ডিসেম্বর) আদালত চারজনের জামিন দিলেও কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান মানিককে কারাগারে পাঠান।

হুসাইন মালিক/এসআর/এএসএম