দেশজুড়ে

হেলিকপ্টার থেকে নেমে ঘোড়ায় উঠলেন বর, কনে পালকিতে

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় নিজের স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় ছেলে-পুত্রবধূকে হেলিকপ্টারে করে বাড়িতে আনলেন বাবা মানিক মিয়া।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় মানিক মিয়ার নিজ বাড়ির পাশে খোলা মাঠে একমাত্র পুত্র ডা. তৌফিকুল ইসলাম রনি ও পুত্রবধূ ডা. নীলিমা আফরিন নওমীকে নিয়ে অবতরণ করেন হেলিকপ্টারটি। পরে হেলিকপ্টার থেমে নেমে বর রনি ঘোড়ায় এবং কনে নওমী পালকিতে চড়ে বাড়ি যান। এসময় বরযাত্রা দেখতে এলাকায় শত শত উৎসুক নারী-পুরুষ ভিড় জমান। পুলিশও সেখানে নিরাপত্তা দেয়।

এর আগে শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) শরীয়তপুরের জাজিরার মো. নুরুজ্জামান বেপারীর জ্যেষ্ঠ কন্যা ডা. নীলিমা আফরিন নওমীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন রনি। পরে শনিবার এই নবদম্পতি হেলিকপ্টারে চড়ে বরের বাড়ি কুয়াকাটায় পৌঁছায়।

পারিবারিক সূত্র জানায়, মানিক মিয়ার দুই সন্তানের মধ্যে রনি বড়। ছোট বেলা থেকেই সে মেধাবী ছিল। তাই বাবা স্বপ্ন দেখতেন ছেলে ডাক্তার হয়ে সাধারণ মানুষের সেবা করবেন। বাবার এ স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন ছেলে রনি। তিনি ছেলে রনিকে বিবাহ করিয়েছেন ডাক্তার কনের সঙ্গে। তাই খুশি হয়ে ছেলে ও পুত্রবধূকে প্রথমদিন নিজ বাড়িতে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে এসেছেন।

স্থানীয় ষাটোর্ধ আব্দুল জব্বার জানান, আগে মানুষ ঘোড়ায় বউ আনতো, পলাকিতে আনতো এখন হেলিকপ্টারে আনে। তাই দেখতে আসলাম। ভালোই লাগলো।

রনির চাচতো বোন ফারজানা সাথী জানান, আমার ছোট ভাই ও ভাবিকে আজকে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে আসছেন চাচা। এটা তার একটি স্বপ্ন, ছেলে ডাক্তার হওয়ায় তাকে উপহার দিয়েছেন। আমরা সবাই দেখতে আসছি।

বর ডা. তৌফিকুল ইসলাম রনি জানান, বাবার স্বপ্ন ছিল আমি ডাক্তার হবো। আল্লাহর রহমতে বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি। তাই বাবা আমাকে হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করিয়েছেন। বাবাকে ধন্যবাদ জানাই সঙ্গে সঙ্গে দিনটি আমার জীবনের একটি স্মরণীয়।

কনে ডা. নীলিমা আফরিন নওমী জানান, শুক্রবার বিয়ে হলেও আমরা আসতে পারিনি। আজকে আমার শ্বশুর হেলিকপ্টারে করে নিয়ে এসেছে। আমার পরিবার ও এলাকার মানুষ অনেক খুশী।

মানিক মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, রনি ছোটবেলা থেকে অনেক মেধাবী। যখন পঞ্চম শ্রেণিতে খুব ভালো রেজাল্ট করে তখন স্বপ্ন বুনেছিলাম ছেলেকে ডাক্তার বানাবো। ডাক্তার হয়েছে এবং ছেলেকে বিবাহ করিয়েছি ডাক্তার মেয়ে দেখে। ছেলে এবং পুত্রবধূকে প্রথমবারের মত আমার বাড়িতে নিয়ে আসলাম হেলিকপ্টারে করে। ছেলে ও পুত্রবধূর মাধ্যমে এলাকার মানুষ সেবা পাবে এটাই এখন স্বপ্ন। হেলিকপ্টার থেকে নেমে ঘোড়ায় চড়ে বর এবং পালকিতে চড়ে কনে নিজ বাড়িতে পৌঁছায়।

মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন তালুকদার জানান, হেলিকপ্টারে করে কুয়াকাটাতে এক নব দম্পতি এসেছে। আমরা সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে তাদের সহযোগিতা করেছি।

আসাদুজ্জামান মিরাজ/এএইচ/জিকেএস