দেশজুড়ে

সুন্দরবনে গোলপাতা আহরণ মৌসুম শুরু

সুন্দরবনে শুরু হয়েছে গোলপাতা আহরণ মৌসুম। এ মৌসুমকে ঘিরে বুধবার (৩১ জানুয়ারি) থেকে সুন্দরবনে গোলপাতা আহরণের কাজ শুরু করেছেন বাওয়ালীরা। এর আগে ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি বাওয়ালীরা গোলপাতা আহরণের জন্য বনবিভাগে রাজস্ব জমা দিয়ে পাস-পারমিট (অনুমতিপত্র) সংগ্রহ করেন। এরপর তারা নৌকাসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদী নিয়ে বনের অভ্যন্তরের গোলপাতা কুপের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।

কুপে পৌঁছে বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল থেকে গোলপাতা আহরণের কাজ শুরু করেছেন বাওয়ালীরা। বাওয়ালীদের আহরণকৃত প্রতি কুইন্টাল গোলপাতায় বনবিভাগকে রাজস্ব প্রদাণ করতে হবে ৭০ টাকা করে।

সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের স্টেশন অফিসার শেখ মো. আনিসুর রহমান জানান, চাঁদপাই রেঞ্জে দুইটি গোলপাতার কুপ রয়েছে। একটি শেলা গোলপাতা কুপ, অপরটি চাঁদপাই গোলপাতা কুপ। এই কুপ দুইটি থেকে এ মৌসুমে ৭ হাজার ৫০ মেট্রিক টন গোলপাতা আহরণ করা যাবে। এরমধ্যে শেলা কুপ থেকে ৩ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন ও চাঁদপাই কুপ থেকে ৩ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন গোলপাতা আহরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

আহরণকৃত প্রতি কুইন্টাল গোলপাতায় বনবিভাগকে ৭০ টাকা করে রাজস্ব প্রদান করতে হবে বাওয়ালীদেরকে। গত মৌসুমে এ দুই গোলপাতার কুপ থেকে বনবিভাগের রাজস্ব আদায় হয়েছিল প্রায় ৯ লাখ টাকা। তবে গতবারের তুলনায় এবার পাস-বিএলসি কম হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শংকায় রয়েছে বনবিভাগ।

কারণ দিনকে দিন বাওয়ালীদের সংখ্যা কমে আসছে। তাই এ মৌসুমের এ পর্যন্ত শেলা কুপে মাত্র ১৬টি পাস (বডি/মানুষের পাস) ও ২৮টি বিএলসি (বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট) দেওয়া হয়েছে। ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি বাওয়ালীদের নেওয়া এ পাসের মেয়াদ থাকবে ২৬ দিন। নির্দিষ্ট এই সময়ের মধ্যেই বাওয়ালীদেরকে সুন্দরবন থেকে গোলপাতা আহরণ শেষে নৌকা নিয়ে লোকালয়ে ফিরে আসতে হবে। নতুবা গুনতে হবে জরিমানা।

এছাড়া পাস ব্যতিরেকে অতিরিক্ত গোলপাতা আহরণ করলেও জরিমানায় পড়বেন বাওয়ালীরা। গোলপাতা আহরণকালে বনের অন্য কোনো গাছপালা কাটলে কিংবা ক্ষতিসাধন করলে তাতেও জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে।

ঢাংমারী স্টেশন অফিসার মো. মহসিন আলী বলেন, ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে শেলা কুপের গোলপাতা আহরণ সম্পন্ন হবে। এরপরই চাঁদপাই কুপের গোলপাতা আহরণ শুরু হবে। মার্চ মাস পর্যন্ত চলবে চাঁদপাই কুপের গোলপাতা আহরণ।

তিনি বলেন, মূলত প্রতি বছর ডিসেম্বরে গোলপাতা আহরণ মৌসুম শুরু হলেও বাওয়ালীরা নৌকা প্রস্তুত করে নিয়ে আসতে দেরি হওয়ায় এবার আহরণ দেরিতে শুরু হয়েছে। দিনকে দিন গোলপাতা আহরণে বাওয়ালীদের আগ্রহ কমছে বলেও জানান তিনি।

আবু হোসাইন সুমন/এফএ/এএসএম