আন্তর্জাতিক

আশ্রয়প্রার্থীদের ঢল সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে জার্মানি

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সংকটের জেরে ইউরোপে শরণার্থী, আশ্রয়প্রার্থী ও অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বহিরাগতদের সেই ঢলকে কেন্দ্র করে প্রবল রাজনৈতিক বিবাদ শুরু হয়েছে জার্মানিতে।

সম্প্রতি জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ও ১৬টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা অভিবাসন নীতির বিভিন্ন দিক ও সমস্যা নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন। শলৎস বলেছেন, বেশ কিছু মৌলিক পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু হলেও এখনই তার সুফল দেখা যাচ্ছে না। যেমন- আশ্রয়প্রার্থীদের নগদ অর্থ সহায়তার বদলে ডেবিট কার্ড দেওয়ার পদক্ষেপ কার্যকর করতে সময় লাগছে।

আরও পড়ুন>>

জার্মানিতে বৈষম্যের শিকার, তবু যেতে আগ্রহী বিদেশি কর্মীরা ইউরোপে আশ্রয় আবেদনে বাংলাদেশিদের নজিরবিহীন রেকর্ড জার্মানিতে আশ্রয়প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিয়মের অনুমোদন

অনেক আশ্রয়প্রার্থী জার্মান সরকারের কাছ থেকে পাওয়া নগদ অর্থ নিজেদের দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।এ নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে দেশটিতে।

এছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশে শরণার্থীদের আবেদন পরীক্ষা ব্যবস্থার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আগামী ২০ জুনের শীর্ষ বৈঠকের আগে সেই উদ্যোগের প্রাথমিক ফলাফলের জন্য চাপ দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রীরা।

প্রধান বিরোধী ইউনিয়ন শিবির আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যার ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে। আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা কমাতে ইউনিয়ন শিবিরের মুখ্যমন্ত্রীরা আরও কিছু দেশের সঙ্গে অভিবাসন চুক্তি স্বাক্ষরের জন্যেও সরকারের ওপর চাপ দিচ্ছেন। আবেদন নাকচ হলে সেখান থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানো সহজ হবে বলে মনে করছেন তারা।

আরও পড়ুন>>

জার্মানিতে দক্ষ কর্মীর চরম সংকট, দেশে দেশে ঘুরছেন মন্ত্রীরা জার্মানির ভুলে ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর তথ্য রাশিয়ার হাতে জাপানকে টপকে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানি

২০২৩ সালে জার্মানিতে প্রায় ৩ লাখ ২৯ হাজার বহিরাগত মানুষ রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। ২০২২ সালের তুলনায় সংখ্যাটি প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি। তার ওপর, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন থেকে প্রায় ১০ লাখ শরণার্থী জার্মানিতে গেছেন।

বহিরাগতদের এমন ঢল সামলাতে, বিশেষ করে পৌর পর্যায়ে নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাদের বাসস্থান, ভাষা শিক্ষা, শিশু-কিশোরদের জন্য কিন্ডারগার্টেন বা স্কুলের ব্যবস্থা করা অনেক পৌর কর্তৃপক্ষের সাধ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

বাড়তি আর্থিক ব্যয়ভার নিয়েও সমস্যা দূর হয়নি। নভেম্বরের বৈঠকে পৌরসভাগুলোকে প্রত্যেক আশ্রয়প্রার্থীর জন্য বছরে ৭ হাজার ৫০০ ইউরো অনুদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও অনেক শহর ও গ্রাম ঘাটতির অভিযোগ করছে।

সূত্র: ডয়েচে ভেলেকেএএ/