সাহিত্য

আমি পেয়েছি যে পতাকা

প্রফেসর ড. এ বি এম জহিরুল হক

আমি পেয়েছি এক সুন্দর পতাকা!সবুজের বুকে লাল সূর্য আঁকাএ পতাকা আমার গৌরব—আমার অহংকারপ্রতিজ্ঞাবদ্ধ আমি এর মর্যাদা রক্ষার।এ পতাকার জন্য রক্ত দিয়েছে কত বীর বাঙালিসম্ভ্রম খুইয়েছে কত কন্যা-ভগ্নি, জায়া-জননী!

মনে পড়ে যায় সেদিনের কত কথামনে পড়ে বাঙালির অপূর্ব বীরত্ব গাথা!মনে পড়ে মহান নেতার কথা—তাঁর বলিষ্ঠ উচ্চারণ,‘তোমরা তৈরি থাকো, ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল সবারআমি যদিও না পারি আর হুকুম দেবার—উদ্যত থাকুক তোমাদের লাঠি আর শানিত তলোয়ারশত্রুর বুকে হানো কঠিন আঘাত বজ্রসমচূর্ণ কর তাদের সকল লালসা আর দম্ভ!’

আমরা সফল হয়েছি, দেশ হয়েছে হানাদার মুক্তউড়ছে সেই লাল-সবুজ পতাকা সর্বত্র!হে মহান নেতা—পবিত্র এ পতাকা তুমিই আমাদের হাতে দিয়েছো তুলেপতাকা উড়ছে স্বাধীন বাংলাদেশের মুক্ত আকাশে!তুমি চলে গেছ অনেক দূরে অনন্ত লোকেতোমার অনেক কাজ—অনেক স্বপ্ন পিছে ফেলে!বেঈমান ঘাতকের বুলেট ধূলিসাৎ করে দিলো সকল স্বপ্ন তোমারথমকে গেল পবিত্র ইচ্ছেগুলো—বাংলাদেশকে সুন্দর করে সাজাবার।সরল তুমি সকলকে কত বিশ্বাস করতে!কোন বাঙালি আঘাত করবে তোমায়এ কথা পারোনি কখনো মানতে।তাই তুমি ধানমন্ডির বাসা চাওনি কখনো ছাড়তেচেয়েছিলে সাধারণের হয়ে তাদের মাঝে থাকতে,চেয়েছিলে তোমার শখের পারাবাতগুলোর দেখভাল করতে!ওরা যে শাস্তি দূত, তুমি বিশ্বাস করতে—ওরা চায় তোমার সান্নিধ্যে থাকতে!তবুও তোমায় যেতে হলো দূরে শত্রুর বুলেটেঅকুতোভয় তুমি অভিমানে বুক পেতে দিলে;তোমার শাস্তির পারাবাতগুলো না জানি কত কাঁদলেকাঁদলে মর্মাহত বাঙালি জাতি সারাদেশে।

তোমার যে বাড়ি ধারণ করে আছে তোমার শত স্মৃতিসংরক্ষণ করেছে সে তোমার পবিত্র রক্তের দাগ—আরও কত অমূল্য সামগ্রী!বুকে তার জ্বলছে কত বিষ-জ্বালাতবুও সে হয়েছে ধন্য! হয়ে আছে আজও‘ধানমন্ডির ৩২ নম্বর শহীদ সংগ্রহশালা’।জাতির জনক হে নেতা মহানআমরা ভুলিনি তোমার অমর কীর্তি অসাধারণ—মুক্তিকামী তুমি অপোসহীন, সংগ্রাম করছো আজীবনজাতি সদা শ্রদ্ধাভরে করে তোমার কথা স্মরণ!

কবি: প্রাক্তন চেয়ারম্যান, মনোবিজ্ঞান বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রাক্তন সভাপতি, বাংলাদেশ মনোবিজ্ঞান সমিতি।

এসইউ/জিকেএস