দেশজুড়ে

একই পরিবারে নিহত ৬, হানিমুনে যাওয়া হলো না নবদম্পতির

দুপুরের খাওয়া-দাওয়া শেষে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রাইভেটকারে করে বরিশালে যাচ্ছিলেন ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাংগর গ্রামের বাসিন্দা হাসিবুর রহমান। যাত্রাপথে গাবখান সেতুর টোলপ্লাজায় দাঁড়িয়ে টোল দিচ্ছিলেন গাড়ির চালক। ঠিক তখনই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাক ধাক্কা দিলে প্রাইভেটকারটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এসময় গাড়িতে থাকা হাসিবুর রহমান (৩২), তার স্ত্রী নাহিদা আক্তার (২৭), সন্তান তাকিয়া (৪), তাহমিদ (৮ মাস), সদ্য বিবাহিত ইমরান (২৬) ও তার স্ত্রী নিপা (২২) ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

Advertisement

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে মরদেহের পাশে বিলাপ করতে করতে এসব কথা বলছিলেন নাহিদার বোন তরিকা আক্তার। তিনি সাংগর গ্রামের আব্দুল বারেকের মেয়ে।

বিলাপ করতে করতে তরিকা আক্তার বলছিলেন, ‘ওরে নাহিদা, ওরে নিপা তোদের ছাড়া আমি ক্যামনে থাকবো? তোদের ছোট ছোট সন্তানদেরও আদর করে দিলাম। এটাই যদি শেষ আদর হবে বুঝতাম তাহলে আরও বেশি করে আদর দিতাম!’

আরও পড়ুন

Advertisement

ঝালকাঠিতে ট্রাক দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ১৪

তিনি জানান, ছোট বোন নিপার একমাস আগে বিয়ে হয়েছে। নবদম্পতির ইচ্ছা ছিল বরিশাল থেকে কুয়াকাটা গিয়ে হানিমুন করবেন। কিন্তু সেই ইচ্ছা আর পূরণ হলো না। এখন হানিমুনের পরিবর্তে চিরশায়িত হবেন তারা।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে পৌর এলাকার পশ্চিম পাশে পঞ্চম চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী গাবখান সেতুর টোলপ্লাজায় সিমেন্টবোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি প্রাইভেটকার ও তিনটি অটোরিকশা নিয়ে খাদে পড়ে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নারী, শিশুসহ ১৪ জন নিহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় ট্রাকচালক ও তার সহকারীকে আটক করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত যান ও ট্রাকটি উদ্ধার করে জব্দ করা হয়েছে।

এদিকে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন। আগামী পাঁচদিনের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম।

Advertisement

আতিকুর রহমান/এসআর/জিকেএস