ক্যাম্পাস

ছুটিতে হল খোলা রাখার দাবি, উপাচার্যের সাক্ষাৎ না পেয়ে ফটক অবরোধ

ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে হল খোলা রাখার দাবি নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে না পারায় প্রধান ফটক অবরোধ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (৩ জুন) দুপুর ২টায় এ ঘটনা ঘটে। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে প্রক্টরিয়াল বডির আশ্বাসে ফটক খুলে দেওয়া হয়।

জানা যায়, ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি উপলক্ষে ১০ জুন থেকে ১৪ দিনের ছুটি ঘোষণা করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রশাসন। এসময় আবাসিক হলগুলোও বন্ধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হল বন্ধের ঘোষণায় ক্ষুব্ধ হন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। ছুটিতে আবাসিক হলগুলো খোলা রাখার দাবি নিয়ে উপাচার্য কার্যালয়ে যান তারা। এসময় উপাচার্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মিটিংয়ে থাকায় শিক্ষার্থীরা দেখা করতে পারেননি। এতে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটক আটকে দিলে দুপুর ২টার শিফটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাসগুলো ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে আটকা পড়ে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহগামী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে প্রক্টরিয়াল বডির আশ্বাসে ফটক খুলে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল প্রক্টরিয়াল বডির মধ্যস্থতায় উপাচার্যের বাসভবনে গিয়ে দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি জমা দেন।

ফটক অবরোধকারীদের অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট ক্লাবের সভাপতি শেখ সাকলাইনসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন। এর আগে একই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর প্রতনিধিদের পক্ষে ঐক্যমঞ্চ নেতারা স্মারকলিপি জমা দেন।

এ বিষয়ে শেখ সাকলাইন বলেন, ‘আমরা সাড়ে ১১টার দিকে ভিসি স্যারের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য গিয়েছিলাম। তার পিএসকে আমরা বারবার বললেও সাক্ষাতের কোনো সুযোগ করে দেননি। কেন সাক্ষাৎ করা যাচ্ছে না সেটাও বলেনি। পরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে গেট আটকায়। পরে ৩টার দিকে আমরা ভিসি স্যারের কাছে গিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি।’

উপাচার্যের একান্ত সচিব মনিরুজ্জামান মিল্টন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার কাজই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভিসির সঙ্গে সাক্ষাত করিয়ে দেওয়া। শিক্ষার্থীরা ১২টার পর এসেছিলেন। ওইসময় আইনশৃঙ্খলা বাহীনির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ একটি মিটিং চলছিল, এমন অবস্থায় তো ভেতরে যাওয়া যায়না। তাদের বারবার বিষয়টি বুঝিয়ে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা মিটিং শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেননি।’

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, একদল শিক্ষার্থী ভিসি স্যারের সঙ্গে দেখা করার জন্য এসেছিল। কিন্তু সেসময় উপাচার্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে ছিলেন। ফলে সেসময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ ছিলনা। শিক্ষার্থীরা অপেক্ষা না করে তারা গেটে আটকে দিয়েছে। এতে ক্যাম্পাসে আসা অতিথিদের গাড়িও আটকে পড়ে। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেছি।’

পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ছুটি বাতিল করা না করা এটা প্রভোস্ট কাউন্সিলের বিষয়। কিন্তু এজন্য হুটহাট করে গেট আটকে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে কেন? এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘ছুটির সিদ্ধান্ত আগেই হয়ে থাকে। প্রভোস্ট কাউন্সিল মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বছর হল খোলা রাখা কোনোভাবেই সম্ভব না। আগামীতে আমরা হল খোলা রাখার বিষয়টি বিবেচনা করবো।’

মুনজুরুল ইসলাম/এনআইবি/জেআইএম