জাতীয়

‘প্যাট চলবে না, আজকের দিনটাই মাটি’

সাভারের বাইপাইল থেকে চট্টগ্রাম রোডে চলাচল করে ঠিকানা পরিবহন। এই গাড়ির চালক সুরুজ মিয়া। প্রতিদিন মালিকের থেকে ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে গাড়িটি ভাড়া নিয়ে আসেন। দিন শেষে মালিককে ৩ হাজার টাকা পরিশোধ আর তেল খরচ বাদে যা থাকে চালক হিসেবে নিজে আর সহযোগী মিলে ভাগ করে নেন। আজ সকাল থেকে মাত্র একটা ট্রিপ দিয়েছেন। এতে আয় হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। গাড়িটি নিউমার্কেটে আসলেই অবরোধে আটকা পড়েন। দুপুর থেকে এখানেই আছেন। এর মধ্যে গাড়িতে থাকা সব যাত্রী নেমে গেছেন।

রোববার (৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় কথা হয় ঠিকানা বাসের চালক সুরুজ মিয়ার সঙ্গে। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, তিন হাজার টাকার কথা বলে গাড়ি ভাড়া নিয়ে আসছি। এক ট্রিপে ইনকাম হয়েছে সাড়ে তিন হাজার। এখন মালিক তো টাকা কম নেবে না। তিন হাজার মালিককে দিয়ে তেলের দাম দেবো কীভাবে! আরও লস হবে। আজকের দিনটাই মাটি, প্যাট চলবে না।

শুধু সুরুজ মিয়া নন, কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান অবরোধে এমন ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেক বাসচালক৷ নীলক্ষেতে কথা হয় ধানমন্ডি ১৩ নম্বর বাসের চালক ইউসুফের সঙ্গে। তিনি বলেন, সারাদিনে যা আয় হয় শতকরা ১৩ টাকা আমি পাই আর ৯ টাকা সহযোগী পায়। আজ দুই হাজারের মতো আয় হয়েছে৷ এর থেকে আর কত পামু৷ সারাদিন বসে আছি, আমাগো ভোগান্তি৷

আরও পড়ুন

শাহবাগ-নীলক্ষেতের পর এবার বাংলামোটর অবরোধ কোটা বাতিলের দাবিতে রোববার ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি

এমন চিত্র বাসচালকদের৷ নিউমার্কেটে একাধিক মার্কেট থাকায় রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কেনাকাটা করতে নিউমার্কেটে আসেন অনেকেই৷ কেনাকাটা করতে আসা এসব মানুষ আজ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন৷ সকালে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও দুপুর থেকে সড়কের অচলাবস্থা তৈরি হয়।

মিরপুর থেকে কেনাকাটা করতে আসা শামসুন নাহার বলেন, সকালে রাস্তা ক্লিয়ার ছিল৷ স্বাভাবিকভাবেই আসছি৷ ফেরার সময় জানতে পারি অবরোধ৷ পুরো রাস্তা বন্ধ৷এখন তো কোনো উপায় দেখছি না৷ সামনে হেঁটে গিয়ে যে গাড়িতে উঠবো সেই গাড়িও তো পাবো না৷ আগে জানলে বাসা থেকে বেরই হতাম না৷

শিক্ষার্থীদের অবরোধে বিক্রিতে ভাটা পড়েছে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের৷ নূরজাহান শপিং কমপ্লেক্সের দোকানি আসিফ বলেন, সারাদিন রাস্তা বন্ধ কাস্টমার আসতে পারছে না৷ দোকান খোলার কয়েক ঘণ্টার পর এ অবস্থা৷ কি করবো বসে আছি৷

শিক্ষার্থীদের চলমান অবরোধের অংশ হিসেবে সায়েন্সল্যাব ও নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নেন ঢাকা ও ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা৷

এনএস/এমআইএইচএস/জিকেএস