এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) প্রকাশিত হয়েছে। ফল প্রকাশের পর আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠেন ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থীরা।
ফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে উচ্ছ্বাস যেন রূপ নেয় বাঁধভাঙা জোয়ারে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবক ও শিক্ষকরাও শরিক হন সেই আনন্দে। এ সময় দেখা যায়, বিজয়ের ‘ভি’ চিহ্ন দেখিয়ে ক্যামেরাবন্দি হওয়ার দৃশ্য।
অনেক শিক্ষার্থী ইন্টারনেটে আগেই ফল জানলেও সহপাঠীদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে ছুটে আসেন প্রিয় কলেজ ক্যাম্পাসে। তাদের প্রিয় শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা করে ফলাফল জানাচ্ছেন ও দোয়া নিচ্ছেন।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা। সহপাঠীরা একে অপরকে নিজের ফলাফল জানাচ্ছেন। নাচ-গান করছেন, মিষ্টি খাওয়াচ্ছেন। ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
আদমজী কলেজে এবারের অংশগ্রহণকারী ২ হাজার ৪১১ জন পরীক্ষার্থীর শতভাগ পাস করেছেন। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২ হাজার ২২৬ জন যা মোট পরীক্ষার্থীর ৯২ শতাংশ।
বিগত বছর শতভাগ পাসসহ জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ২ হাজার ৬২ জন যা মোট পরীক্ষার্থীর ৮৭ শতাংশ। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, এবার কলেজটির বিজ্ঞান বিভাগের জিপিএ-৫ এর সংখ্যা ১,৯১৮ যা মোট পরীক্ষার্থীর ৯৮ শতাংশ।
কলেজের শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় গতবারের চেয়ে এবারের ফলাফল ভালো হয়েছে বলে জানান কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ বি এম নওরোজ এহসান। তিনি বলেন, গত বছরের চেয়ে জিপিএ-৫ বেড়েছে। এটি অবশ্যই খুশির সংবাদ। এর শতভাগ কৃতিত্ব শিক্ষার্থীদের। পাশাপাশি আমাদের কলেজের শিক্ষক এবং অভিভাবকদের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে এটি সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ সফলতার জন্য কলেজের মূলমন্ত্র শিক্ষা-শৃঙ্খলা-নৈতিকতা। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক- শিক্ষিকামণ্ডলীর আন্তরিক সহযোগিতা ও নিবিড় তত্ত্বাবধান মূল প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।
বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পাওয়া মোহতাসিমুল খান শুভ বলেন, আমার মা-বাবার অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে আমি এতোদূর আসতে পেরেছি। বিএমএ লং কোর্সে গিয়ে দেশের সেবা করতে চাই।
বাণিজ্য বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া মেহজাবিন তানিন বলেন, অনেক খুশি লাগতেছে কারণ জিপিএ-৫ পাওয়ার জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। এই কৃতিত্ব আমার মা-বাবার এবং আদমজী কলেজের।
বাণিজ্য বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া আরেক শিক্ষার্থী আফিয়া বলেন, প্রথমে কৃতজ্ঞতা জানাই শ্রদ্ধেয় শিক্ষদের। তারা আমাদের নিজের সন্তানের মতো স্নেহ করেছেন। সবচেয়ে বেশি খুশি লাগছে মা-বাবাকে সন্তুষ্ট করতে পেরে। তারা আমাদের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত কলেজসমূহের মধ্যে মোট সাতবার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা লাভ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০০০ ও ২০২৪ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কলেজ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। যার ফলে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা লাভ করেছে।
এসআরএস/এসআইটি/জেআইএম