খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে সরকার খোলা বাজারে চাল ও আটা বিক্রি করছে ওপেন মার্কেট সেল (ওএমএস) কার্যক্রমের আওতায়, যা সারাদেশের জেলা পর্যায় এবং কিছু পৌরসভা পর্যন্ত বিস্তৃত। এ কার্যক্রম আরও ব্যাপকভাবে বাড়াতে চায় অধিদপ্তর।
জানা গেছে, মূল্যস্ফীতির পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমজীবী ও প্রান্তিক মানুষের সুবিধার কথা চিন্তা করে এ কার্যক্রম প্রতিটি উপজেলায় নেওয়ার প্রস্তাব করা হচ্ছে। উপজেলা পর্যায়ে অন্তত দুটি বিক্রয়কেন্দ্র করা হবে। সেজন্য খাদ্য অধিদপ্তর দু-একদিনের মধ্যে প্রস্তাব দিচ্ছে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে।
মূলত বাজারে চালসহ অন্য পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার খোলাবাজারে তুলনামূলক কম দামে চাল ও আটা বিক্রি করে। এ কার্যক্রম আরও বিস্তৃত হলে বাজারে স্থিতিশীলতা থাকবে। পাশাপাশি নিম্নআয়ের বেশি মানুষ ওএমএস কার্যক্রমের সুবিধাভোগী হবে বলে মনে করছে খাদ্য অধিদপ্তর।
এ বিষয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের সরবরাহ, বণ্টন ও বিপণন বিভাগের পরিচালক আব্দুস সালাম বলেন, আমরা একটি প্রস্তাবনা প্রস্তুত করেছি, যাতে প্রতিটি উপজেলা পর্যন্ত এ কার্যক্রম ছড়িয়ে দেওয়া যায়। এখন পর্যন্ত এ কার্যক্রম জেলা শহরে আছে, কিছু পৌরসভায়ও আছে। যে কারণে উপজেলা পর্যন্ত করতে মন্ত্রণালয়ে আমরা প্রস্তাবনা দিচ্ছি। আশা করি শিগগির এ কার্যক্রম শুরু করা যাবে। কাল-পরশুর মধ্যে এ প্রস্তাবনা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, চড়া মূল্যস্ফীতিসহ বিভিন্ন সূচকে মানুষের খরচ বেড়েছে, সে তুলনায় আয় বাড়েনি। যে কারণে দিন দিন ওএমএসের চাহিদা বাড়ছে। সে বিষয়টি আমরা বিবেচনায় নিয়ে এ প্রস্তাব দিচ্ছি।
খাদ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ওএমএস কার্যক্রমে চালের দাম প্রতি কেজি ৩০ টাকা ও আটা সাড়ে ২৭ টাকা। এখন দেশের ৯০৬টি বিক্রয়কেন্দ্রে এ কার্যক্রম চলে। যার মধ্যে কিছু জেলায় শুধু চাল বিক্রি হয়, বড় শহরে চাল ও আটা দুটিই মেলে। ঢাকায় ওএমএস কার্যক্রম চলে ১৯১টি বিক্রয়কেন্দ্রে। এছাড়া ছোট জেলায় ৫টি থেকে শুরু করে শ্রমঘন জেলায় ৩০টি পর্যন্ত বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এসব বিক্রয়কেন্দ্রে ৯০৭ টন চাল ও ১ হাজার ২০২ টন আটা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত এ কার্যক্রম চালু হলে বিক্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা হবে ১ হাজার ৭০০টি। যার জন্য চাল ও আটার বরাদ্দ হবে প্রায় দ্বিগুণ।
এদিকে, একজন গ্রাহক ওএমএসে সর্বোচ্চ ৫ কেজি চাল ও ৪ কেজি আটা কিনতে পারছেন। প্রতি কেন্দ্রের জন্য দৈনিক এক টন চাল ও এক থেকে দেড় টন আটা বরাদ্দ হচ্ছে।
এর বাইরে সেপ্টেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য সারাদেশে শুরু হবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি। এর উপকারভোগী পরিবারের সংখ্যা ৫০ লাখ ১০ হাজার ৯৯৪।
এ কর্মসূচির আওতায় প্রতিটি পরিবার মাসে একবার ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি চাল কিনতে পারবেন।
এদিকে বাজারে এক কেজি মোটা চাল কিনতে লাগছে সর্বনিম্ন ৬৫ টাকা। আটাও ৫৫ টাকার নিচে নেই। সেখানে ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় সাশ্রয়ী মূল্যে চাল-আটা কিনতে পারছে মানুষ। যে কারণে সবখানে ওএমএসের ট্রাক সেল থেকে স্বল্পমূল্যে পণ্য কিনতে দীর্ঘলাইন নিম্নআয়ের মানুষের।
এনএইচ/ইএ/জিকেএস