ঈদুল আজহার পরদিনই নগরবাসীকে স্বস্তি দিতে রাজধানী ঢাকাকে দ্রুত পরিষ্কার করার উদ্যোগ নেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণের জন্য দুই সিটি করপোরেশন সমন্বিত কাজ করেছে। ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই শহরের অধিকাংশ এলাকা কোরবানির বর্জ্যমুক্ত হয়েছে।
Advertisement
তবে এখনো কিছু কিছু জায়গায় কোরবানির বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া আজ রোববারও কেউ কেউ কোরবানি দিচ্ছেন। ফলে এসব কোরবানির পশু থেকেও বর্জ্য উৎপন্ন হচ্ছে। বিক্ষিপ্তভাবে কিছু জায়গায় আগের দিনের বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা গেলেও সকাল থেকেই পরিছন্নতাকর্মীদের বর্জ্য অপসারণের কাজ করতে দেখা যায়।
রোববার (৮ জুন) রাজধানীর আরামবাগ, মতিঝিল, কাকরাইল, শান্তিনগর, বাড্ডা, খিলগাঁও, ধানমন্ডি, মগবাজার, রামপুরা, মালিবাগ, গুলশান, মহাখালী ও তেজগাঁও ঘুরে দেখা গেছে এসব এলাকার রাস্তা পরিষ্কার করা হয়েছে। তবে কিছু স্থানে দুর্গন্ধ ও রক্তের দাগ দেখা যায়। দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে বেশিরভাগ বাড়ির সামনে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে রাখতে দেখা গেছে।
রামপুরার জামতলার বাসিন্দা মহিউদ্দিন বলেন, একটা সময় ঈদের পরে কয়েকদিন রাস্তায় হাঁটতেও কষ্ট হতো। কোরবানির বর্জ্যের গন্ধ থাকতো। এবার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে স্বস্তি পাচ্ছি। গতকাল সন্ধ্যার মধ্যেই আমাদের এলাকার কোরবানির বর্জ্য নিয়ে গেছেন সিটি করপোরেশনের পরিছন্নতাকর্মীরা। যে কারণে এলকায় কোরবানির বর্জ্যের দুর্গন্ধ নেই।
Advertisement
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দেখা যায় বনশ্রীর বেশিরভাগ অঞ্চল। তবে দুই-এক জায়গায় কোরবানির বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখ গেছে। বনশ্রীর বাসিন্দা মো. দেলোয়ার বলেন, আমাদের এলকার কোরবানির পশুর বর্জ্য গতকালই নিয়ে গেছে। এবার বর্জ্য পরিষ্কার করার কাজ বেশ গোছালো ছিল। অধিকাংশ মানুষ বস্তায় বর্জ্য ভরে রাখেন। বর্জ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল খুব কম। এ কারণে পরিছন্নতাকর্মীদের পরিষ্কার করতে সুবিধা হয়েছে।
আরও পড়ুনফ্রিতেও নিচ্ছে না ছাগলের চামড়া, ফুটপাতে ফেলে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরাঢাকায় ছুটির আমেজ, ফাঁকা সড়কে চলাচলে স্বাচ্ছন্দ্যবনশ্রীর এক বাসার সামনে কোরবানির বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা যায়। ওই বসার দারওয়ান মো. ইদ্রিস আলী বলেন, আমাদের এখানে কোরবানির মাংস বানাতে একটু দেরি হয়ে যায়। তাই কিছু বর্জ্য রয়ে গেছে। তবে এলকার বেশিরভাগ বাসার সামনে বর্জ্য নেই। আর সকাল থেকেই পরিছন্নতাকর্মীরা কাজ করছেন। আশা করছি শিগগির আমাদরে এখানেও পরিষ্কার হয়ে যাবে। তাছাড়া দুর্গন্ধ যাতে না ছড়ায়, সে জন্য রাতেই ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গুলশান-১ এর বাসিন্দা সাফওয়ান বলেন, গুলশানে সাধারণত কোরবানির বর্জ্য পড়ে থাকে না। ঈদের দিন পরিষ্কার হয়ে যায়। এবারও ঈদের দিন কোরবানির বর্জ্য পরিষ্কার হয়ে গেছে। গুলশান এখন পুরোপুরি পরিষ্কার-ঝকঝকে।
বাড্ডায় বর্জ্য পরিষ্কারের কাজ করা মো. সুমন বলেন, গতকাল রাত ৩টা পর্যন্ত কাজ করেছি। আমার দায়িত্ব যে এরিয়ার মধ্যে, তার কোথাও কোরবানির বর্জ্য পড়ে নেই। যদি কিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে, তা আজ পরিষ্কার করে ফেলবো। এখন বাসা-বাড়ির ময়লা সংগ্রহ করছি। এর সঙ্গে রাস্তায় কোরবানির বর্জ্য পেলে সেটাও নিয়ে নিচ্ছি।
Advertisement
মালিবাগের বাসিন্দা মেহেরুন বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে এবার কোরবানির বর্জ্য অপসারণের কাজ ভালোই গোছানো ছিল। দ্রুতই কোরবানির বর্জ্য এলাকা থেকে নিয়ে গেছেন সিটি করপোরেশনের লোকজন। যে কারণে এলকায় কোরবানির বর্জ্যের দুর্গন্ধ ছড়ায়নি।
তবে রামপুরা জাকের গলির বাসিন্দা মো. আক্কাস বলেন, গতকাল আমাদের এলাকা থেকে কোরবানির বর্জ্য খুব একটা নেয়নি সিটি করপোরেশনের লোকজন। ফলে সারা রাতই এই এলাকার বেশিরভাগ বাসার সামনে কোরবানির বর্জ্য পড়ে ছিল। এতে এলাকায় কিছুটা দুর্গন্ধও সৃষ্টি হয়। অবশ্য সকাল থেকে পরিছন্নতাকর্মীরা বর্জ্য অপসারণের কাজ শুরু করেছেন।
এমএএস/কেএসআর/জেআইএম