তিনি শতভাগ ফিট ছিলেন না। উয়েফা নেশন্স লিগের শিরোপা জেতার পর ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো নিজেই জানালেন এই খবর। তবে চোট আর ব্যথা তাকে আটকাতে পারেনি। শিরোপা জয়ের ম্যাচ, দেশের হয়ে খেলতে হবে, জেতাতে হবে-এই মন্ত্রই যেন সব ভুলিয়ে রেখেছিল রোনালদোকে।
Advertisement
৪০ বছর বয়সী রোনালদো প্রি-গেম ওয়ার্মআপে মাঠে প্রথম বের হন, তখন পর্তুগালের সমর্থকদের মধ্যে উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই তার নাম লেখা জার্সি পরে ছিলেন।
রোনালদোকে সামনে দেখে বহু সমর্থক মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করতে থাকেন। হয়তো এটাই শেষ আন্তর্জাতিক ফাইনাল পাঁচবারের ব্যালন ডি'অর জয়ী ফুটবলারের। রোনালদো শনিবারই বলে ফেলেছেন, ‘চিরকাল খেলা তো আর সম্ভব নয়।’
এর তিনদিন আগে তিনি জার্মানির বিরুদ্ধে ২৫ বছরে প্রথম জয়ে পর্তুগালকে সাহায্য করেছিলেন, সেমিফাইনালে ২-১ গোলে জয়ের গোলটি করেছিলেন রোনালদো। করলেন ফাইনালেও। যে গোলই মূলত সমতায় ফেরায়, বাঁচিয়ে দেয় পর্তুগালকে। নিয়ে যায় টাইব্রেকারে।
Advertisement
চোট নিয়েই রোনালদো ম্যাচের ৮৮ মিনিট পর্যন্ত খেলেছেন। তারপর আর পারছিলেন না। শেষ মুহূর্তে তাকে উঠিয়ে নেন কোচ। টাইব্রেকারেও শট নেননি। তবে ডাগআউটে বসে দলের জন্য দুই হাত তুলে প্রার্থনা করেছেন। শিরোপা নিশ্চিত হওয়ার পর কেঁদেছেন অঝোরে।
ম্যাচের ৮৮তম মিনিটে যখন মাঠ ছাড়ছিলেন, দর্শকেরা দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানান রোনালদোকে। কোচ রবের্তো মার্তিনেজ তাকে জড়িয়ে ধরেন।
চোট নিয়ে খেলা প্রসঙ্গে রোনালদো বলেন, ‘ওয়ার্মআপ থেকেই আমি কিছুটা অনুভব করছিলাম, বেশ কিছুদিন ধরেই। কিন্তু জাতীয় দলের জন্য হলে আমি পা ভেঙে হলেও খেলতাম। এটি ছিল ট্রফির লড়াই, আমি সব কিছু উজাড় করে দিয়েছি।’
আগামী বছর কানাডা, মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপে পর্তুগাল যোগ্যতা অর্জন করলে রোনালদো ষষ্ঠবারের মতো অংশ নিতে পারেন।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘স্পেনের বিপক্ষে এই জয় আমাদের আত্মবিশ্বাস দিয়েছে বিশ্বকাপে ভালো কিছু করার। এখন আমরা বিশ্বাস করি যে আমরা বিশ্বের যেকোনো দলকে হারাতে পারি।’
রোনালদোর ক্লাব ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত, কারণ তার বর্তমান সৌদি ক্লাব আল-নাসরের সঙ্গে চুক্তি জুনের শেষেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। তিনি ক্লাবের শেষ ম্যাচের পর সামাজিক মাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘এই অধ্যায় শেষ।’ রোববার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আবার বললেন, ‘আমার ক্লাব নিয়ে অবস্থান অপরিবর্তিত।’
শনিবার বলেছিলেন, তিনি ক্লাব বিশ্বকাপে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যদিও অনেক ক্লাবই তাকে খেলার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে ক্লাবের হয়ে যত শিরোপাই জেতেন না কেন, দেশের হয়ে খেলাটাই রোনালদোর কাছে সবসময় স্পেশাল।
পর্তুগিজ যুবরাজ বলেন, ‘আমি বহু দেশে থেকেছি, অনেক ক্লাবের হয়ে খেলেছি, কিন্তু পর্তুগালের হয়ে খেলাটা সব সময়ই ভিন্ন অনুভূতি দেয়।’
এমএমআর/জেআইএম