খেলাধুলা

এই প্রথম কোনো আফ্রিকান দলের কাছে হারলো ইংল্যান্ড

এই প্রথম কোনো আফ্রিকান দলের কাছে হারলো ইংল্যান্ড

নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে কখনো কোনো আফ্রিকান দেশের কাছে হারেনি ইংল্যান্ড। মঙ্গলবার রাতের আগে ২১ বার আফ্রিকান দেশগুলোর বিপক্ষে খেলতে নেমে ইংলিশরা একবারও হারেনি।

Advertisement

এবার ২২তম ম্যাচে এসে সেই হারের লজ্জাটাও পেতে হলো টমাস টুখেলের দলকে। মঙ্গলবার রাতে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে আফ্রিকান দেশ সেনেগালের কাছে ৩-১ গোলে হেরে গেলো ইংলিশরা। এ নিয়ে টানা ২৪ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড গড়লো সেনেগালিজরা।

ম্যাচটি ছিল নটিংহ্যামের সিটি গ্রাউন্ডে। ঘরের মাঠে এভাবে একটি আফ্রিকান দেশের কাছে হারতে হবে, স্বপ্নেও হয়তো কল্পনা করেনি ইংলিশ সমর্থকরা। বিশেষ করে ১৯৬৬ সালের পর যখন একটি বিশ্বকাপ জেতার জন্য টমাস টুখেলকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, ঠিক তখনই এভাবে হারতে হলো। তার অধীনে চার ম্যাচে এটা প্রথম হার ইংল্যান্ডের।

এই ম্যাচে সেনেগাল তাদের আক্রমণাত্মক খেলা এবং কৌশলগত দক্ষতার মাধ্যমে ইংল্যান্ডের উপর দারুণ আধিপত্য বিস্তার করে। ম্যাচটি ছিল দুই দলের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। তবে, আসল কাজটা করে দেখিয়েছে সেনেগালই।

Advertisement

আফ্রিকার অদম্য সিংহ নামে খ্যাতে সেনেগালের হয়ে গোল করেন ইসমাইলা সার, হাবিব দিয়ারা এবং শেখ সাবালি। ইংল্যান্ডের হয়ে গোল করেন হ্যারি কেইন। যদিও হ্যান্ডবল করার কারণে জুদ বেলিংহ্যামের একটি গোল বাতিল করে দেয়া হয়। তবে, বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়েছিল ইংল্যান্ডই। ৬১ ভাগ বল দখল ছিল তাদের। সেনেগালের ছিল ৩৯ ভাগ বলের দখল।

অ্যান্ডোরার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে যে ম্যাচ খেলেছিল ইংল্যান্ড, সেই দলে ১০টি পরিবর্তন আনেন কোচ টুখেল। শুধুমাত্র হ্যারি কেইনই তার জায়গা ধরে রাখতে পেরেছিলেন। যদিও ম্যাচের ৭ম মিনিটেই হ্যারি কেইনের গোলে লিড নিয়েছিল ইংল্যান্ড। প্রথমে অ্যান্টোনি গর্ডনের শট ঠেকিয়ে দেন সেনেগালের গোলরক্ষক এডুয়ার্ড মেন্ডি। কিন্তু বল হাত থেকে ছুটে গেলে কেইন শট নেন। গোল হয়ে যায়।

প্রথমার্ধেই সেনেগাল দ্রুত গতিতে খেলায় ফিরে আসে এবং এবং তাদের আক্রমণভাগের খেলোয়াড়রা ইংল্যান্ডের রক্ষণভাগকে বেশ চাপে ফেলে। ৪০তম মিনিটেই গোলের দেখা পায় সেনেগাল। নিকোলাস জ্যাকসনের পাস থেকে বল পেয়ে কাইল ওয়াকারকে কাটিয়ে ইসমাইলা সার বল জড়িয়ে দেন ইংল্যান্ডের জালে।

দ্বিতীয়ার্ধে ইংল্যান্ড কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও সেনেগালের সুযোগ সৃষ্টি এবং গোল করার দক্ষতা তাদের জয় নিশ্চিত করে। ৬২তম মিনিটে হাবিব দিয়ারা গোল করে সেনেগালকে এগিয়ে দেন। গোলরক্ষক ডিন হেন্ডারসনের মাথার ওপর দিয়ে বলটা তিনি ইংলিশদের জালে জড়িয়ে দেন।

Advertisement

৯০+৩ মিনিটে শেষ গোলটি করে ইংল্যান্ডের পরাজয়ের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন শেখ তিদিয়ানে সাবালি। এরপরই শেষ বাঁশি বাজান রেফারি। ইংল্যান্ডের একমাত্র গোলটি ছিল তাদের সান্ত্বনার প্রতীক।

হারের পর ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেইন বলেন, ‘এটা মোটেও ভালো হলো না। আমরা প্যানিকড হচ্ছি না। তবে, এটা ঠিক যে আমরা মোটেও ভালো খেলিনি। আমাদেরকে আরও ভালো খেলতে হবে।’

কোচ টমাস টুখেল স্বীকার করেছেন, সেনেগালের কাছে হেরে পুরো ইংল্যান্ড দল ‘ফ্রোজেন’ হয়ে গেছে। তবে বিশ্বকাপের এখনও এক বছর বাকি। সুতরাং, প্যানিক হওয়ার কোনো কারণ নেই।

আইএইচএস/