তেহরান ও এর আশেপাশে ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলা মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে আসন্ন পারমাণবিক আলোচনা ভেস্তে দেওয়ার কৌশল হিসেবে পরিচালিত হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইউরোপীয় পররাষ্ট্র সম্পর্ক কাউন্সিলের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা বিভাগের উপ-প্রধান এলি গেরানমায়েহ এমনটিই মনে করছেন।
Advertisement
তিনি বলেন, এই হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমাবদ্ধ করতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সম্ভাব্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পিত।
যদিও কিছু ইসরায়েলি কর্মকর্তা দাবি করছেন, এই হামলার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করা হবে- তবে এলি গেরানমায়েহ মনে করেন, হামলার সময় ও ব্যাপকতা এটিই স্পষ্ট করে যে এর মূল লক্ষ্য ছিল আলোচনার পথই বন্ধ করে দেওয়া।
তিনি আরও জানান, এই পরিস্থিতিতে রোববার (১৫ জুন) ওমানের মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠেয় যুক্তরাষ্ট্র-ইরান আলোচনা স্থগিত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। সাময়িকভাবে কূটনৈতিক প্রক্রিয়া থেমে গিয়ে সামরিক উত্তেজনা নতুন করে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে।
Advertisement
ইরানি নেতৃত্বের মধ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একটি ‘আনুপাতিক জবাব’ দেওয়ার ব্যাপারে সর্বসম্মত অবস্থান রয়েছে বলেও জানান তিনি। তার মতে, ইরান সরাসরি ইসরায়েলি সামরিক স্থাপনাগুলোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোও লক্ষ্যবস্তু করতে পারে।
তবে লেবাননে ইরানের মিত্র হিজবুল্লাহর অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়ায় প্রতিক্রিয়া কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। গেরানমায়েহ বলেন, ইরান সম্ভবত ড্রোন হামলার সঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্র হামলাও চালাতে পারে, যাতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অতিক্রম করা যায়। এছাড়া, তারা মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করার পাশাপাশি হরমুজ প্রণালি ও লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচলেও বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে যে, এই হামলার পেছনে তাদের কোনো হাত নেই; ইসরায়েল এককভাবে এই হামলা চালিয়েছে। এলি গেরানমায়েহ বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই দাবির ফলে ইরান সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রকে জড়ানোর ব্যাপারে সতর্ক থাকবে। নেতানিয়াহুর কৌশলে পা না দিয়ে ইরান সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক সংঘর্ষ এড়াতে চাইবে বলেও মনে করেন তিনি।
সূত্র: আল জাজিরা
Advertisement
এসএএইচ