ঈদুল আজহার ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাতক্ষীরার ঢাকামুখী যাত্রীরা। সড়কই একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম হওয়ায় চাহিদার তুলনায় বাস সংকট দেখা দিয়েছে। বাড়তি ভাড়া দিয়েও টিকিট মিলছে না বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
Advertisement
সাতক্ষীরা শহরের সঙ্গিতা মোড়, নিউ মার্কেট ও বাস টার্মিনাল এলাকায় কাউন্টারগুলোতে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। অনেকেই সকাল থেকে দীর্ঘ অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থেকেও পাচ্ছেন না কাঙ্ক্ষিত বাসের টিকিট।
সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় যাওয়ার কোনো রেল বা নৌপথ নেই। ফলে যাত্রীদের একমাত্র ভরসা সড়ক পথে বাস সার্ভিস। ঈদের ছুটির পর রাজধানীমুখী মানুষ বাড়তে থাকায় বাসের ওপর চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ।
ঢাকাগামী যাত্রী আব্দুর রহমান পেশায় একজন গার্মেন্টস কর্মী। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসেছিলাম। এখন ফিরে যেতে হবে। সকালে এসেছি, দুপুর হয়ে গেলো, টিকিট পাইনি। কেউ কেউ দুই-তিনশ টাকা বেশি দিচ্ছে, তবুও সিট মিলছে না।
Advertisement
ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিবারই এই সময় এমন হয়। কিন্তু এবার সমস্যা বেশি। আগেভাগে টিকিট কেটে না এলে এখন আর যাওয়ার উপায় নেই। অফিসে না গেলেও সমস্যা হবে।
অপর যাত্রী আয়েশা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় যাব। ওর বাবা সরকারি চাকরি করে। সে ছুটি শেষ হওয়ার আগেই ঢাকায় চলে গেছে। রোববার থেকে মেয়ের স্কুল খোলা। কিন্তু বাস নেই, সকাল থেকে কাউন্টারগুলোতে ঘুরে একটি কাউন্টারে রাতের গাড়িতে দুটি সিট পেয়েছি। এখন বাড়ি ফিরে যাব। রাতে আবার এখানে আসতে হবে।
সাতক্ষীরা-ঢাকা রুটে পরিবহন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান কে-লাইন পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার মো. সোহেল জাগো নিউজকে বলেন, সাতক্ষীরা থেকে গড়ে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০টি বাস ঢাকায় চলাচল করছে। কিন্তু এবারের ঈদে যাত্রী সংখ্যা অনেক বেশি। যে যাত্রীরা আগে থেকে টিকিট কেটেছেন, তাদেরকেই আগে পাঠানো হচ্ছে। একটি বাস ঢাকায় গিয়ে আবার ফিরে এসে যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, আগেভাগে ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত না থাকলেও অতিরিক্ত যাত্রী ও সময়াভাবে কেউ কেউ সুযোগ নিচ্ছে, যা কোম্পানির নীতিমালার বাইরে। তবে আমরা বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়া নিয়ে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করেছি।
Advertisement
অনেক যাত্রী অভিযোগ করেছেন, কাউন্টারগুলোতে নেই পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনা বা সুনির্দিষ্ট তথ্যসেবা। কোন বাস কখন ছাড়বে, কবে টিকিট মিলবে সেটা জানতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। ভোগান্তির এ সময় প্রশাসনের নজরদারি এবং পরিবহন সমন্বয় জরুরি বলে মত দেন তারা।
ঈদের পর কর্মস্থলে ফেরার এ বাস্তবতা সাতক্ষীরার হাজারো মানুষকে বিপাকে ফেলেছে। শুধুমাত্র সড়কপথ নির্ভরতা, বাসের স্বল্পতা ও টিকিট ব্যবস্থাপনায় সুশৃঙ্খলতা না থাকায় দীর্ঘ অপেক্ষা, অতিরিক্ত ভাড়া ও মানসিক চাপ এখন ঈদের আনন্দ ম্লান করে দিয়েছে অনেকের।
আহসানুর রহমান রাজীব/এফএ/এমএস