কৃষি ও প্রকৃতি

পুষ্টিসমৃদ্ধ ফসল উৎপাদনে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

পুষ্টিসমৃদ্ধ ফসল উৎপাদনে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

কৃষকদের মধ্যে পুষ্টিকর ফসল উৎপাদনের আগ্রহ বাড়ছে। তবে এজন্য প্রধান প্রতিবন্ধকতা রয়েছে কাজের ধারাবাহিকতা না থাকা, মানসম্পন্ন বীজের অভাব। এসব সমস্যার সমাধান করতে পারলে কৃষকদের মধ্যে ফসল চাষের আগ্রহ আরও বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা।

Advertisement

‘কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারকরণ প্রকল্প’ শীর্ষক জাতীয় কর্মশালায় তারা এসব কথা বলেন। বুধবার (১৮ জুন) সকালে রাজধানীর খামারবাড়িস্থ মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের হলে কর্মশালাটির আয়োজন করে কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারকরণ প্রকল্প।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলমের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা অনুবিভাগ) মো. মাহবুবুল হক পাটওয়ারী, এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিএইর প্রকল্প বাস্তবায়ন ও আইসিটি উইংয়ের পরিচালক মো. আব্দুস সাত্তার, প্রশাসন ও অর্থ উইংয়ের পরিচালক মো. হাবিবউল্লাহ্।

কারিগরি সেশন পরিচালনা করেন মো. হাবিবউল্লাহ্ এবং স্বাগত বক্তব্য ও প্রকল্পের কার্যক্রম উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক, আ.ন.ম. আনোয়ারুল হাসান।

Advertisement

আ.ন.ম. আনোয়ারুল হাসান বলেন, ১৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি জানুয়ারি ২০২৩ সালে শুরু হয়ে ২৭ সালে শেষ হবে। তিনি বলেন, ৮ বিভাগের ৪৯ জেলার ১৫৫টি উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। পুষ্টিসমৃদ্ধ ফসল চাষ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ১৩ হাজার ৭১৮টি বিভিন্ন ফসলের প্রদর্শনী, ১৫৫টি পুষ্টিসমৃদ্ধ ফসল গ্রাম সৃজনের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হব।

তিনি জানান, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির কৌশল হিসেবে ৩ লাখ ৮ হাজার ৬১৮টি কৃষক পরিবারে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন এবং ৩৭ হাজার ২০০ কৃষক-কৃষাণীর আয়বর্ধনে বারটানের সাতটি আঞ্চলিক কার্যালয়ে সাতটি মিনি নিউট্রিশন ল্যাব স্থাপন করা হবে।

প্রকল্পটির অর্জন সম্পর্কে আ.ন.ম. আনোয়ারুল হাসান বলেন, প্রকল্পের অধীনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৯৯ একর জমিতে ২৬৮.৬৪ মেট্রিক টন জিংক ধান, ১৯৮ একর জমিতে ৮৮১.৭১ মেট্রিক টন ভুট্টা, ৯৯ একর জমিতে ১ হাজার ৪০২ মেট্রিক টন মিষ্টি আলু, ১৫১.৮ একর জমিতে ১ হাজার ৩৫২.০৭ মেট্রিক টন মিষ্টি কুমড়া, ৯৯ একর জমিতে ৭৩.৩৯ মেট্রিক টন চিনা বাদাম এবং ১৩২ একর জমিতে ৭২.১৪৯ মেট্রিক টন ডাল জাতীয় ফসল উৎপাদন হয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় ২০২২-২৩ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছর পর্যন্ত ৪৬৪.৩৫ মেট্রিক টন ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত ৬ হাজার ৩৬০ জন কৃষক-কৃষাণীকে দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া এখন পর্যন্ত জিংক সমৃদ্ধ ৩০০টি ধানের জাত, ৩০০টি করে মিষ্টি আলু ও চিনা বাদাম, ৬০০টি ভুট্টা, মিষ্টি কুমড়া, ফ্রেন্সবিন, শসা, গাজর, ব্রকলি, রঙিন বাঁধাকপি, ফুলকপি ও কচু জাতীয় ৪৬০ ফসল উৎপাদনের প্রদর্শনী করা হয়েছে। জিংক সমৃদ্ধ ধান ব্রি-৮৪, ১০০ ও ১০২ ধান চাস করে সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে। পুষ্টিসমৃদ্ধ এ ধানের চাল শিশুদের পুষ্টি উন্নয়নে সহায়ক।

Advertisement

মো. ছাইফুল আলম বলেন, পুষ্টিতে পিছিয়ে থাকার কারণ হচ্ছে আমাদের অস্বচ্ছতা ও অজ্ঞতা। তিনি বলেন, আমাদের প্রকল্পগুলোর মধ্যে সমন্বয় দরকার।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মো. আব্দুস সাত্তার বলেন, বর্তমানে ২৯টি প্রকল্প চলমান আছে। বাঘার পদ্মার চরে কৃষকরা চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন। আমরা যে কোনো নতুন জাত এক বছরের মধ্যে মাঠপর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছি। তিনি আর্থিকসহ সব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা রাখার আহ্বান জানান।

এনএইচ/এমআরএম/এএসএম