অর্থনীতি

ফের ডিএসইতে দরপতন, কমেছে লেনদেন

ফের ডিএসইতে দরপতন, কমেছে লেনদেন

এক কার্যদিবস উত্থান তো পরের কার্যদিবসেই দরপতন, এমন পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। এতে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। সেইসঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।

Advertisement

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম কামার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এরপরও বেড়েছে মূল্যসূচক। তবে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে ঈদের পর লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে দুই কার্যদিবস ডিএসইতে সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে এবং দুই কার্যদিবসে সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। আর এক কার্যদিবস সূচক মিশ্র ছিল।

ঈদের পর প্রথম কার্যদিবস রোববার (১৫ জুন) শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকের মিশ্র প্রবণতা দেখা যায়। তবে দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (১৬ জুন) বড় উত্থান হয়। সেইসঙ্গে বাড়ে লেনদেনের গতি। ডিএসইতে ২৩ কার্যদিবস পর ৪০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেনের দেখা মিলে। তবে পরের কার্যদিবস মঙ্গলবার (১৭ জুন) শেয়ারবাজারে আবার বড় দরপতন হয়। বুধবার (১৮ জুন) পতনে থেকে বেরিয়ে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে।

এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুর দিকে ডিএসইতে সবকটি মূল্যসূচক বাড়ে। লেনদেনের প্রথম এক ঘণ্টা সূচকের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকে। কিন্তু বেলা ১১টার থেকে বাজারে চিত্র বদলে যায়। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকে।

Advertisement

ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র ৭১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৫৮টির। আর ৬৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৪২টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৪৪টির দাম কমেছে এবং ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ১৮টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৫৮টির দাম কমেছে এবং ৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১১টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৬টির এবং ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৩টির দাম কমেছে এবং ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২২ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৭৫৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৭৮২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বাজারটিতে ৩০৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩২৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ২২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।

Advertisement

এ লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে লাভেলো আইসক্রিমের। কোম্পানিটির ১৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিচ হ্যাচারির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকার। ১১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, অগ্নি সিস্টেম, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট, ফাইন ফুডস, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস এবং মাগুরা মাল্টিপ্লেক্স।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে এক পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০০টির এবং ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৬ কোটি ১২ লাখ টাকা।

এমএএস/এমএএইচ/জেআইএম