ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে চট্টগ্রামে ১৬টি সংসদীয় আসনে ২৭৭টি ভোটকেন্দ্র মেরামত করতে হবে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে কমিশন থেকে মেরামতযোগ্য ভোটকেন্দ্রের তালিকা চাওয়া হলে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে ২৭৭টি ভোটকেন্দ্রের তালিকা পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে মেরামত ও সংস্কার প্রয়োজন এমন ভোটকেন্দ্রের তালিকা চাওয়া হয়েছিল। আমরা উপজেলা ও মহানগরীতে সরেজমিনে দেখে ২২৭টি ভোটকেন্দ্রের তালিকা কমিশনে পাঠিয়েছি।
চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলার মেরামতযোগ্য ভোটকেন্দ্রের তালিকা চাওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের মাধ্যমে উপজেলা ও নগরীর মেরামতযোগ্য ভোট কেন্দ্রগুলোর তালিকা তৈরি করা হয়। এতে ১৬ সংসদীয় আসনে ২০২০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৭৭টি মেরামতযোগ্য ভোটকেন্দ্রের তালিকা তৈরি করা হয়।
চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বশির আহমেদ স্বাক্ষরিত এই তালিকা নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস থেকে মোরামতযোগ্য ভোটকেন্দ্রের তালিকায় দেখা গেছে, বেশিরভাই ভোটকেন্দ্রের মধ্যে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সীমানা প্রাচীর নেই, কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দরজা-জানালা জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে, অনেক প্রতিষ্ঠানের ভোটকেন্দ্রে উপরের ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে, শৌচাগার নেই, বিদ্যুতের লাইট নেই।
এরমধ্যে ৩-৪টি ভবন জরাজীর্ণ, এসব ভবন নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। অনেক ভোটকেন্দ্রের যাতায়াত পথ চলাচল অনুপযোগী এবং অনেকগুলো মেরামত করতে হবে। যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাউন্ডারি বা সীমানা প্রাচীর নেই, কিংবা ছোটখাট মেরামত-সংস্কারের প্রয়োাজন আছে, সে সব প্রতিষ্ঠান সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে নিজস্ব অর্থায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করে এরইমধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬ সংসদীয় আসনে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ২০২০টি। ভোট কক্ষের সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৯৫৪টি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামে ১৬ সংসদীয় আসনে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৯৫৮টি। আর ভোটকক্ষের সংখ্যা ছিল ১১ হাজার ৮৫৪টি। একাদশ জাতীয় সংসদের তুলনায় দ্বাদশে ৬২টি ভোট কেন্দ্র বেড়েছিল। এবারও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যার অনুপাতে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন জেলা সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিস। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে সরকারের তরফ থেকে নির্বাচনী প্রস্তুতির আলোচনা শুরু হওয়ায়, নির্বাচন কমিশন (ইসি) তার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে এ ধরনের তাগাদা দিয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র সংস্কার করতে গত ১৬ জুন চার মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নির্দেশনা দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির উপ-সচিব দেওয়ান মো. সারওয়ার জাহান স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে এ নির্দেশনা পাঠানো হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবদের এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে নির্দেশনাটি পাঠানো হয়েছে নির্বাচন কমিশন থেকে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃতব্য স্থাপনাগুলোর সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতি সংক্রান্ত তথ্যাদি ১৭ জুলাই–এর মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে।
Advertisement
এমডিআইএইচ/এসএনআর/জিকেএস