জাগো জবস

নতুন চাকরির শুরুতে যা জানা জরুরি

নতুন চাকরির শুরুতে যা জানা জরুরি

হাসান মাহমুদ সম্রাট

Advertisement

নতুন চাকরি মানেই নতুন এক অভিজ্ঞতার শুরু। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, প্রেজেন্টেশন আর আড্ডার জীবন পেরিয়ে হঠাৎ করেই এক গম্ভীর, গোছানো আর নিয়মে বাঁধা পরিবেশে পা রাখেন একজন তরুণ। কেউ মুখের ওপর কিছু বলেন না কিন্তু ছোট ছোট আচরণ দিয়ে বুঝিয়ে দেন, ‘এভাবে নয়, ওভাবে করো!’ তাই শুধু কাজ জানলেই হয় না। কীভাবে অফিসে চলতে হয়; সেটাও শেখা দরকার। এ ব্যবস্থাই হলো অফিস এটিকেট।

চলুন দেখে নিই এমন ৮টি সহজ বিষয়, যা আপনাকে অফিসে একজন দায়িত্বশীল, বিনয়ী ও পেশাদার কর্মী হিসেবে পরিচিত করে তুলবে—

সময় মেনে চলুনঅফিসে ঠিক সময়ে পৌঁছানো শুধু শৃঙ্খলা নয়, এটি আপনার দায়িত্ববোধের পরিচয়। দিনের শুরুতেই ৫-১০ মিনিট আগে এলে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে পারবেন। কাজেও মন বসবে। মিটিং বা কাজের সময়ও ঠিক রাখুন। তাতে আপনার প্রতি আস্থা বাড়বে।

Advertisement

পরিপাটি ও মার্জিত পোশাকঅফিসে খুব দামি না হলেও পরিপাটি জামা-কাপড় পরাই শ্রেয়। পরিষ্কার, গোছানো আর রুচিশীল পোশাক ব্যক্তিত্বকে ইতিবাচক ভাবে তুলে ধরবে। জামা-কাপড় যেন পরিষ্কার থাকে। আপনাকে দেখে যেন অন্যরা বলতেই পারেন—এই ছেলে বা মেয়েটি যত্নবান, রুচিশীল।

ভদ্রতা বজায় রাখুন‘দয়াকরে’, ‘ধন্যবাদ’, ‘দুঃখিত’—শব্দগুলো ছোট হলেও মানুষের মনে বড় জায়গা করে নেয়। আপনার ব্যবহারকে অনেক সুন্দর করে। চেঁচিয়ে কথা বলা, কারও কথা কেটে যাওয়া বা গসিপ করা থেকে বিরত থাকুন।

ই-মেইল বা সোশ্যাল মিডিয়াঅফিসে মেসেজ বা ই-মেইল লেখার সময় ছোট করে, স্পষ্ট করে আর মার্জিত ভাষায় লিখুন। ইংরেজি শব্দ বা শর্টফর্মের ব্যবহার বুঝে করুন- ‘ASAP’ বা ‘plz’ টাইপ লেখাগুলো না লিখলেই ভালো।

আরও পড়ুন সাংবাদিকতা পেশা হিসেবে কেমন  যুক্তরাষ্ট্রের নক্স কলেজে ৩ কোটির বৃত্তি পেলেন সাদ 

সবার সঙ্গে সম্মান দেখানজুনিয়র বা সাপোর্ট স্টাফদের সঙ্গেও সম্মান দিয়ে কথা বলুন। অফিসে সবাই কাজ করেন, তাই সবাই সম্মানের যোগ্য।

Advertisement

না বুঝলে প্রশ্ন করুননতুন জায়গায় সবকিছু বোঝা সহজ না। তাই যদি কোনো কাজ বুঝতে অসুবিধা হয়, লজ্জা না পেয়ে জিজ্ঞেস করুন। এতে উল্টো সবাই বুঝবে আপনি শেখার আগ্রহ রাখেন। কাজ বুঝতে সমস্যা হলে সরাসরি জিজ্ঞেস করুন। ভুল করে বসে থাকার চেয়ে শেখার আগ্রহ দেখানো অনেক বেশি ভালো।

নিজের জায়গা গুছিয়ে রাখুননিজের ডেস্ক বা জায়গাটা পরিষ্কার ও গোছানো রাখুন। টেবিলে অপ্রয়োজনীয় কাগজ, খাবারের প্যাকেট বা কাপ না রাখাই ভালো। ফাইল, কাগজ বা খাওয়া-দাওয়ার জিনিস ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখলে তা আপনার পরিচ্ছন্নতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

ব্যক্তিগত জিনিসে ব্যস্ত না থাকাঅফিস সময়টা অফিসের জন্যই রাখুন। ফোনে ব্যক্তিগত গল্প, ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম স্ক্রল এসব কম করলে কাজেও মনোযোগ বাড়ে, আবার সিনিয়রদের চোখেও ভালো থাকবেন।

চাকরির শুরুটা অনেক সময় দ্বিধা আর অনিশ্চয়তায় ভরা থাকে। আপনি যদি সময়মতো আসেন, গুছিয়ে চলেন, শেখার মনোভাব রাখেন আর সবাইকে সম্মান দেন। তাহলে ধীরে ধীরে কাজের জায়গাটিই হয়ে উঠবে আপনার পরিচয়ের উৎস। আপনার ব্যবহারই আপনার সবচেয়ে বড় পরিচয়। জ্ঞান ও দক্ষতার পাশাপাশি আচরণই আপনাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

লেখক: এইচআর এক্সিকিউটিভ, ইউএস-বাংলা গ্রুপ।

এসইউ/জিকেএস