রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আবেদনে দলীয় প্রতীক হিসেবে প্রথম পছন্দ হিসেবে ‘শাপলা’ চেয়েছে তারা।
Advertisement
রোববার বিকেলে এনসিপি আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নেতৃত্বে দল নিবন্ধনের প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র নির্বাচন কমিশনে জমা দেন তারা।
ইসিতে এনসিপির দলীয় প্রতীক ‘শাপলা’ চাওয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে বলছেন, শাপলা দেশের জাতীয় ফুল। গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতীক। নির্বাচন কমিশন যদি নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপিকে শাপলাকে তাদের নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে দেয় তাহলে যুক্তিসঙ্গত কারণেই অভিযোগ উঠবে এনসিপিকে অন্যায়ভাবে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কারণ মানুষ শাপলা প্রতীককে ক্ষমতা আর প্রভাবের সঙ্গে মিলিয়ে দেখে। এ প্রতীক কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতীক হতে পারে না।
অবশ্য অনেকে বলছেন, শুধু শাপলা জাতীয় প্রতীক নয়, এটি জাতীয় প্রতীকের একটি অংশমাত্র। ফলে দলের প্রতীক হতে কোনো বাধা নেই। এনসিপিও বলেছে, শাপলা প্রতীক পেতে তাদের কোনো বাধা নেই।
Advertisement
জাতীয় প্রতীক হিসেবে বাংলাদেশের সংবিধানের ‘জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা ও প্রতীক’ অংশে ৪ এর ৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্রের জাতীয় প্রতীক হইতেছে উভয় পার্শ্বে ধান্যশীর্ষবেষ্টিত, পানিতে ভাসমান জাতীয় পুষ্প শাপলা, তাহার শীর্ষদেশে পাটগাছের তিনটি পরস্পরসংযুক্ত পত্র, তাহার উভয় পার্শ্বে দুইটি করিয়া তারকা।’
এ প্রতীক নিয়ে বাংলাপিডিয়ায় বলা হয়েছে, জাতীয় প্রতীক গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রতীক। এ প্রতীক হলো পানিতে ভাসমান জাতীয় ফুল শাপলা এবং এর উভয় পার্শ্বে একটি করে ধানের শীষ, চূড়ায় পাটগাছের পরস্পরযুক্ত তিনটি পাতা এবং পাতার উভয় পার্শ্বে দুটি করে তারকা। পানি, ধান ও পাট প্রতীকে বৈশিষ্ট্যমন্ডিত হয়েছে বাংলাদেশের নিসর্গ ও অর্থনীতি। এ তিনটি উপাদানের উপর স্থাপিত জলজ প্রস্ফুটিত শাপলা হলো অঙ্গীকার, সৌন্দর্য ও সুরুচির প্রতীক। তারকাগুলোতে ব্যক্ত হয়েছে জাতির লক্ষ্য ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা।
১৯৭২ সালে সদ্য স্বাধীন দেশের জাতীয় প্রতীক ও বিভিন্ন মনোগ্রাম তৈরি করতে বাংলাদেশ সরকার শিল্পী পটুয়া কামরুল হাসানের ওপর দ্বায়িত্ব দেয়। মোহাম্মদ ইদ্রিস ও শামসুল আলমসহ বেশ কয়েকজনকে এই কাজগুলো তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে মোহাম্মদ ইদ্রিসের আঁকা ভাসমান শাপলা ও শামসুল আলমের দুই পাশে ধানের শীষবেষ্টিত পাটপাতা ও চারটি তারকা অংশটি মিলিয়ে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হয়।
এমএমএআর/জেআইএম
Advertisement