খেলাধুলা

শেষ ম্যাচে বিসিবির অভিযান, তবুও টিকিট কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্য

শেষ ম্যাচে বিসিবির অভিযান, তবুও টিকিট কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্য

‘এই টিকিট লাগবে, টিকিট..!!’ মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের দুই নাম্বার গেটের উল্টোপাশে ফুটপাথ ধরে বাংলাদেশ-পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দেখতে আসা দর্শকের সারি। যেহেতু মূল প্রবেশপথ। শেষ ম্যাচ বলে অনেক ভিআইপির আগমন ঘটেছে স্টেডিয়ামে। সে কারণে পুরো রাস্তাই ফাঁকা রাখা হয়েছে। দর্শকদের চলতে হচ্ছে শুধুমাত্র ফুটপাথ ধরে। সেখানে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ কানে আসলো টিকিট বিক্রির এই আওয়াজ।

Advertisement

বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজের সব টিকিট বিক্রি হয়েছে অনলাইনে। অফলাইনে কোনো টিকিট বিক্রি হয়নি। দর্শকরা মোবাইলে কিংবা প্রিন্ট কপিতে কিউআর কোড স্ক্যান করে মাঠে প্রবেশ করেছেন। কিন্তু টিকিট কালোবাজারীরা শুধু অফলাইনে টিকিট বিক্রিই নয়, প্রতারণাও করেছে দর্শকদের সঙ্গে।

অনলাইনে কাটা টিকিটির ডাউনলোড কপি প্রিন্ট করে তাকে বেশ কয়েকটি ফটোকপি করে বিক্রি করেছে সরলমনা দর্শকদের কাছে। ফটোকপি নিয়ে গ্যালারিতে প্রবেশ করতে গিয়ে অনেকেই গেটে আটকে গেছেন, প্রবেশ করতে টপারেননি। এ নিয়ে জাগোনিউজে প্রথম ম্যাচেই সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল, ‘মিরপুরে টিকিটের কালোবাজারি, প্রতারিত হচ্ছেন দর্শকরা

দ্বিতীয় ম্যাচেও দেখা গেলো সেই টিকিট কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্য। তারা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। প্রকাশ্যে টিকিট কালোবাজারি করতে দেখা গেছে তাদের। এই প্রতিবেদককে পর্যন্ত হেনস্তা করার চেষ্টা করেছে তারা। এ নিয়ে জাগোনিউজে প্রকাশ হয়েছিল, ‘টিকিট কালোবাজারিরা আরো বেপরোয়া, প্রতারণার শিকার দর্শকরা’।

Advertisement

বিসিবির গোচরে আনা হয় এ বিষয়টা। যার ফলে আজ তৃতীয় ম্যাচে যেন টিকিট কালোবাজারি না হয়, সে কারণে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিসিবি। বাংলাদেশ-পাকিস্তান টিকিট ব্যবস্থাপনা কমিটির সিনিয়র সদস্য সাব্বির আহমেদ রুবেল জানালেন, ‘আমরা ১০-১২ জনের বিশেষ টিম গঠন করেছি। তারা ম্যাচ শুরুর কয়েকঘণ্টা আগে থেকে স্টেডিয়ামের চারপাশে টহল দেবে। প্রয়োজনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতা নেবে। তবুও টিকিট কালোবাজারীদের প্রতিহত করা হবে। তাদেরকে কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবে না।’

খেলা শুরুর আগে সরেজমিনে দেখা গেলো বিসিবির টহল জোরদার করা হচ্ছে। বিশেষ টিমের সদস্যরা স্টেডিয়ামের চারপাশে ঘুরছেন টিকিট কালোবাজারীদের ধরার জন্য। তাদেরকে দেখে সাময়িক সময়ের জন্য গা-ঢাকা দেয় কালোবাজারীরা। তারা সরে যেতেই আবার রাস্তায় চলে আসে সেই কালোবাজারীরা।

মিরপুর-২ এর পাশে পূর্ণিমা হোটেলের সামনে বেশ কয়েকজন কালোবাজারি। যাদের পকেটভর্তি টিকিটির প্রিন্ট কপি। জটলা বাধিয়ে বিক্রি করছে তারা ম্যাচের টিকিট। বিসিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে ফোন করে জানানো হলে সেখানে বিশেষ টিমের সদস্যদের পাঠানো হয়; তাদের দেখে সরে যায় কালোবাজারীরা। টিমের সদস্যরা চলে যেতেই আবার ফিরে আসে তারা। টিকিট কালোবাজারিদের আজ দেখা গেছে সংঘবদ্ধ। তিন-চারজন করে একসঙ্গে।

রাতের দিকে টিকিট ব্যবস্থাপনা কমিটির সিনিয়র সদস্য সাব্বির আহমেদ রুবেল জাগো নিউজকে বললেন, ‘আমাদের বিশেষ টহল টিম আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে বেশ কয়েকজন কালোবাজারিকে ধরতে গিয়েছিল। তাদের দেখে কালোবাজারিরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। ধরা সম্ভব হয়নি। তবে, কোনো গেটেই টিকিট হাতে নিয়ে এসে প্রবেশ করতে না পারার কোনো ঘটনা আমাদের চোখে ধরা পড়েনি।’

Advertisement

আইএইচএস/এমএমআর/জেআইএম