অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ত্রাণ সরবরাহের অংশ হিসেবে আকাশপথে খাদ্য ও ওষুধ পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। পাশাপাশি, অঞ্চলটিতে নির্দিষ্ট মানবিক করিডোর খোলা হবে বলেও জানিয়েছে তারা। গাজায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি গভীরতর হওয়ায় বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে তেলআবিব।
গত ২ মার্চ যুদ্ধবিরতি আলোচনার ভেঙে পড়ার পর ইসরায়েল গাজায় পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে। তবে মে মাসের শেষদিকে সীমিত আকারে ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেয়। সর্বশেষ শনিবার (২৬ জুলাই) সাতটি ত্রাণ প্যাকেজ পাঠানোর ঘোষণা দেয় ইসরায়েল। এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাত জানিয়েছিল, তারা ত্রাণ সরবরাহ আবার শুরু করবে। যুক্তরাজ্যও জর্ডানসহ বিভিন্ন অংশীদারের সঙ্গে কাজ করার কথা বলেছে।
এই ঘোষণার আগেই ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স সংস্থা জানায়, শনিবার গাজায় ইসরায়েলি হামলা ও গুলিতে ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের অনেকে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে সহায়তা নিতে অপেক্ষা করছিলেন।
একই দিনে ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের অ্যাকটিভিস্টদের একটি নৌকা গাজার দিকে ত্রাণ নিয়ে অগ্রসর হলে ইসরায়েলি সেনারা সেটি জব্দ করে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, গাজায় শিশুদের মধ্যে অপুষ্টি আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।
আরও পড়ুন>>
গাজায় ক্ষুধার যন্ত্রণায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়ছে মানুষ, কান্না থামছে না শিশুদের ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা লোকজনকে গুলি, গাজায় নিহত আরও ১১৫ অভুক্ত অবস্থায় দিন পার করছে গাজার এক-তৃতীয়াংশ মানুষইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে গাজায় প্যারাস্যুটের মাধ্যমে ত্রাণসামগ্রী ফেলা হয়েছে।
এর পাশাপাশি ইসরায়েল জানিয়েছে, জাতিসংঘের কনভয়ের জন্য নির্দিষ্ট করিডোর বরাদ্দ দেওয়া হবে, যার মাধ্যমে খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ করা যাবে।
তবে জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহ প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য এবং বিপজ্জনকও বটে। তারা ইসরায়েলকে আরও বেশি সড়কপথে কনভয় প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহ অত্যন্ত ব্যয়বহুল, অকার্যকর এবং এমনকি এটি ক্ষুধার্ত মানুষকে মেরে ফেলতে পারে। এটি দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধ করতে পারবে না।
ইসরায়েল দাবি করে, তারা গাজায় ট্রাক প্রবেশে বাধা দিচ্ছে না, বরং জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থাই পর্যাপ্ত পরিমাণে সহায়তা সংগ্রহ করছে না। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ইসরায়েলই কঠোরভাবে সীমান্ত এবং গাজার ভেতরের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে।
শনিবার সন্ধ্যায় গাজার দিকে যাওয়া ‘হান্দালা’ নামে একটি নৌযানে ইসরায়েলি সেনারা অভিযান চালায়। লাইভ ফিডে দেখা যায়, নৌযানটিতে ইসরায়েলি বাহিনীর হস্তক্ষেপের পর সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়।
এর আগে একই ধরনের আরও একটি নৌযান, ‘ম্যাডেলিন’–এ গত মাসে অভিযান চালায় ইসরায়েল।
সূত্র: এএফপিকেএএ/