ফরিদপুরের নগরকান্দায় ভুয়া র্যাব পরিচয়ে ডাকাতি ও অপহরণের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০। গ্রেফতারদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ভুয়া র্যাব জ্যাকেট, ওয়াকি-টকি, হাতকড়া, অস্ত্রসদৃশ গ্যাসলাইট ও ব্যবহৃত মাইক্রোবাস। এছাড়া তাদের দ্বারা অপহৃত সোনা ব্যবসায়ী দুই ভাইকেও অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ভুক্তভোগী জয়দেব আধ্য (৫৩) ও বিশ্বনাথ আধ্য (৫৭) সাতক্ষীরার বাসিন্দা। ব্যবসায়িক প্রয়োজনে রাজধানীর তাঁতিবাজার থেকে জুয়েলারি তৈরির যন্ত্রাংশ কিনে সোমবার (২৮ জুলাই) বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসে করে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার জয়বাংলা মোড়ে পৌঁছালে একটি মাইক্রোবাস এসে র্যাব পরিচয়ে বাস থামিয়ে দেয়।
পরে মাইক্রোবাস থেকে র্যাব লেখা কটি পরা তিন-চারজন ব্যক্তি বাসে ওঠে দুই ভাইকে জোর করে নামিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। তাদের চোখ গামছা দিয়ে বেঁধে ফেলা হয় এবং ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে নগদ ২ হাজার ৭০০ টাকা ও যন্ত্রাংশ ছিনিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি তাদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়।
ঘটনার পরপরই র্যাব-১০ এর একটি অভিযানিক দল জয়বাংলা মোড় এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে ভুয়া র্যাব পরিচয়ে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী দুই ভাইকেও উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন— দিদার (২৯), মো. সাইফুল ইসলাম (৩০), মিন্টু গাজী (৪৫), মো. জামিল (৩২) এবং স্বপন খান (৪৫)। তাদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম ও স্বপন খান পালানোর সময় উত্তেজিত জনতার হাতে ধরা পড়েন এবং গণপিটুনির শিকার হন। পরে র্যাব সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।
র্যাব জানায়, গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে চারটি র্যাব লেখা জ্যাকেট, তিনটি র্যাব ক্যাপ, দুই জোড়া হাতকড়া, একটি স্টেনগান, একটি পিস্তলসদৃশ গ্যাসলাইট, দুটি ওয়াকিটকি সেট, পিস্তল কাভার, মোবাইল ফোন ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেফতারদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই রয়েছে একাধিক মামলা। দিদারের বিরুদ্ধে রয়েছে আটটি, মিন্টু গাজীর বিরুদ্ধে তিনটি, সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে। জামিলের বিরুদ্ধে রয়েছে একটি হত্যা মামলা এবং স্বপন খানের বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলার পাশাপাশি চারটি হত্যা মামলা।
র্যাব-১০ এর অধিনায়ক আরও বলেন, আন্তঃজেলা বাসে যাত্রার আগে ভিডিও ধারণ ও সিসি ক্যামেরা স্থাপন করলে এ ধরনের ঘটনা রোধ সম্ভব। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে কাউকে সন্দেহ হলে সঙ্গে সঙ্গে ৯৯৯ এ কল করতে বা কাছের থানায় যোগাযোগ করতে আহ্বান জানান তিনি।
টিটি/এমএএইচ/এমএস