বর্ষা মৌসুম শেষ হলেও বন্যার দেখা নেই ছোট-বড় ১৬ নদ-নদীময় উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে। প্রতিবছর কয়েক দফা বন্যায় এ জেলার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়লেও এবারের চিত্র ভিন্ন। এতে পানির অভাবে বিপাকে পড়েছেন জেলার পাট চাষিরা। বৃষ্টির অভাবে পাট পচানোর জায়গা না থাকায় ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে কষ্টার্জিত সোনালি আঁশ।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর পাট আবাদ হয়েছে ১৬ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। এখন পর্যন্ত কাটা হয়েছে প্রায় ছয় হাজার হেক্টর। এরআগে গত বছর এ জেলায় ১৭ হাজার ২৬৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়।
জানা গেছে, এ মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা মেলেনি। জুলাই মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত ৪০০ মিলিমিটারের ওপর হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও তা হয়নি। বৃষ্টি না হওয়ায় এ অঞ্চলের খাল-বিল পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। পানির অভাবে পাট নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন চাষিরা। ফলে কৃষিসহ জীববৈচিত্র হুমকির মুখে রয়েছে।
সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি এলাকার কৃষক সোলায়মান আলী বলেন, এবার বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টির দেখা নেই। ৪০ শতক জমিতে পাট চাষ করে বিপদে পড়ে গেছি। পাট কেটে ওই জমিতে আমন চারা রোপণ করার কথা, কিন্তু পানির অভাবে পাট কাটা হচ্ছে না।
আরেক কৃষক ফজলুল হক বলেন, পানি নেই, তাই পাট কেটে ঘোড়ার গাড়িতে করে দূরে কোথাও নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু প্রতিটি পাটের বোঝা (আঁটি) ৪-৫ টাকা করে চাচ্ছে। এরকম বাড়তি খরচ হলে পাট চাষে লাভের পরিবর্তে লোকসান হবে।
সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের পাট চাষি নুর আলম বলেন, আমার দুই বিঘা জমির পাট কেটে জমিতে ফেলে রাখছি। পাট গাছগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। পানির অভাবে পাট জাগ (পচাতে) দিতে পারছি না।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পাট এরই মধ্যে কাটা শুরু হয়েছে। জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে জুন ও জুলাই মাসে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে খাল-বিল শুকিয়ে গেছে। কৃষকরা পাট জাগ দিতে সমস্যায় পড়ছেন। যদি বৃষ্টিপাত না হয় কৃষকদের বিকল্প উপায়ে পাট পচানোর পরামর্শ দেওয়া হবে।
রোকনুজ্জামান মান/এমএন/এমএস