বাগেরহাটে সুপারির বাম্পার ফলন, দাম কমায় বিপাকে চাষিরা
চলতি বছর সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে, ছবি: জাগো নিউজ
বাগেরহাটে চলতি বছর সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। দামও কমেছে মানভেদে কুড়িপ্রতি ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা। সুপারির ফলন বেশি হলেও গতবারের তুলনায় দাম কম হওয়ায় বিপাকে চাষিরা। অপরদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বড় মোকামে চাহিদা কম থাকায় দাম কমেছে কিছুটা।
জেলার অন্যতম বড় সুপারির হাট কচুয়া উপজেলার বাধাল বাজার। সপ্তাহে দুইদিন রোববার ও বৃহস্পতিবার ভোরের আলো ফুটতেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাকডাকে মুখর হয়ে ওঠে হাটটি। জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে ঝুড়ি, ব্যাগ ও বস্তায় নিয়ে আসা সুপারি দর কষাকষির মাধ্যমে বেচাকেনা চলে দুপুর পর্যন্ত। বাজারের দিনে এক থেকে দেড় কোটি টাকার সুপারি বিক্রি হয়। পাইকারদের হাত ঘুরে এই সুপারি চলে যায় চট্টগ্রাম, রংপুর, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।

বাধাল বাজারের সুপারির ব্যবসাকে কেন্দ্র করে প্রায় ৫ শতাধিক শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। যারা সুপারি বাছাই, গোনা, বস্তা ভরা ও ট্রাকে ওঠানোর কাজ করে দিনে ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা আয় করেন।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর বাগেরহাটে ১০ হাজার একর জমিতে সুপারি উৎপাদন হয়েছে। যাতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ২৭ হাজার মেট্রিক টন।

জেলাজুড়ে সুপারির ফলন বেশি হলেও দাম কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়ছেন চাষিরা। প্রতি কুড়ি (২১০টি সুপারিকে এক কুড়ি বলা হয়) সুপারি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা। গত মৌসুম এবং চলতি মৌসুমের প্রথমদিকের তুলনায় এই দাম ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা কম।
আরও পড়ুন
লতিকচু চাষে আলোর মুখ দেখছেন রফিকুল
ঝালকাঠিতে সুপারির ভালো ফলনেও দামে আশাহত চাষিরা
পাইকারি ক্রেতা মো. নিয়াম গাজী বলেন, ‘১৮ বছর ধরে ব্যবসা করি। এ বছর অনেক বেশি ফলন হয়েছে। এ জন্য গত বছরের তুলনায় দাম একটু কম।’
কচুয়ার রামচন্দ্রপুর থেকে আসা সুপারি চাষি জীবন ডাকুয়া বলেন, ‘গত বছর যে হারে টাকা হয়েছে; এ বছর তার চেয়ে কম হবে না। করণ ফলন ভালো হয়েছে। দাম গত বছরের তুলনায় কুড়িপ্রতি ১৫০ টাকার মতো কম। দাম আগের মতো থাকলে চাষিরা আরও লাভবান হতাম।’

বাধাল বাজারের ইজারাদার খান শহিদুজ্জামান মিল্টন বলেন, ‘চাষিদের নিরাপত্তা, ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে বাজারে স্বাধীনভাবে বেচাকেনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শতবর্ষী বাজারে বেচাকেনা বাড়ানোর জন্য চাষিদের কাছ থেকে খাজনা নেওয়া হয় না। তবে বাজারে জায়গার সংকট হওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের চলাচলে কিছুটা অসুবিধা হয়। পাশে জমি অধিগ্রহণ করে বাজারটি বড় করলে ক্রেতা-বিক্রেতা বাড়তো।’
বাগেরহাটের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মোতাহার হোসেন বলেন, ‘বাগেরহাটের মাটি ও আবহাওয়া সুপারি চাষের জন্য খুব উপযোগী হলেও কৃষকেরা সঠিকভাবে গাছের পরিচর্যা করেন না। নিয়মিত গাছের পরিচর্যা করলে ফলন আরও বাড়বে। সেজন্য কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।’
নাহিদ ফরাজী/এসইউ/এএসএম