ভিডিও EN
  1. Home/
  2. কৃষি ও প্রকৃতি

কাঠঠোকরা পাখির অজানা কাহিনি

কৃষি ও প্রকৃতি ডেস্ক | প্রকাশিত: ১২:১৩ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

সানজানা রহমান যুথী

আমাদের প্রকৃতিতে এমনও অনেক বিস্ময়কর পাখি আছে, যারা খুব সহজেই কঠিন কাজ করে ফেলে। বলছিলাম কাঠঠোকরা পাখির কথা। এরা মিনিটে একশ বারেরও বেশি ঠোকরাতে পারে। আর দিনে প্রায় আট থেকে দশ হাজারেরও বেশি গাছ ঠোকরায়। তবে সর্বশক্তি দিয়ে কাঠ ঠোকরালেও এদের মস্তিষ্কে কোনো ক্ষতি হয় না। ক্ষতি না হওয়ার অন্যতম কারণ হলো এদের জিহ্বা। এদের জিহ্বা অবিশ্বাস্য রকমের লম্বা হয়। কখনো কখনো ঠোঁটের প্রায় দ্বিগুণ।

সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য হলো, কাঠঠোকরা পাখির জিহ্বা মস্তিষ্কের পেছনের দিকে পেঁচানো থাকে। মাথার পেছন ঘুরে আবার তা সামনে চলে আসে। মূলত এই জিহ্বাই কাঠঠোকরা পাখির মাথায় সিট বেল্টের মতো কাজ করে। অর্থাৎ যখন কাঠঠোকরা পাখি গাছে আঘাত করে; তখন তাদের মাথায় বিপরীত প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। সেই প্রতিক্রিয়া কাঠঠোকরার জিহ্বা শোষণ করে নেয়। ঠোকরানোর সময় তার মস্তিষ্কের ওপর চাপ কমিয়ে দেয়।

কাঠঠোকরা পাখির কাঠ ঠোকরানোর অন্যতম কারণ হলো খাদ্য সংগ্রহ করা। এরা গাছের ভেতরে থাকা পোকা খেয়ে বেঁচে থাকে। এজন্যই কাঠঠোকরাকে গাছের ডাক্তার পাখি বলা হয়। কারণ এরা গাছের ভেতরে থাকা পোকামাকড় খেয়ে ফেলে, যা গাছের দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার জন্য সহায়ক।

আরও পড়ুন
কেন হারিয়ে যাচ্ছে শকুন
হাঁস কেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানিতে থাকে?

কাঠঠোকরা পাখি খাবারের খোঁজে গাছে ছোট ছোট করে ঠোকরায়। আর যদি বড় করে কোনো গাছে ঠোকরায়, তাহলে বুঝতে হবে এরা থাকার জন্য ঘর তৈরি করছে। মজার ব্যাপার হলো, এরা এক মৌসুমের বেশি এক বাসায় থাকে না। প্রতি মৌসুমে এরা নতুন করে ঘর তৈরি করে থাকে।

পুরাতন গাছের ঘরগুলোতে অন্য পাখি বসবাস করে। বাংলাদেশে বেশ কিছু প্রজাতির কাঠঠোকরা দেখা যায়। এদের মধ্যে বাংলা কাঠঠোকরা, বড় কাঠঠোকরা, মেটেটুপি কাঠঠোকরা, হিমালয়ী কাঠঠোকরা, হলদেচন্দি কাঠঠোকরা। কাঠঠোকরার বিভিন্ন প্রজাতির পাখির আকার বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। বর্ণিল দেহ, লম্বা ও শক্ত ঠোঁট আর পায়ের গড়ন—কাঠঠোকরাকে দিয়েছে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য।

শহরের কোলাহল এদের কাঠ ঠোকরানোর শব্দ তেমন শোনা না গেলেও গ্রামাঞ্চলে বেশ পরিচিত কাঠঠোকরা পাখি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, শহরের মতো গ্রামেও গাছের পরিমাণ কমে যাওয়ায় এ পাখির সংখ্যা এখন বিলুপ্তির পথে। তাই আমাদের এখনই কাঠঠোকরাসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি সংরক্ষণে বনায়ন করতে হবে। তবেই বাঁচবে পাখি, বাঁচবে প্রকৃতি।

এসইউ

আরও পড়ুন