ভিডিও EN
  1. Home/
  2. কৃষি ও প্রকৃতি

বাড়িতে টার্কি মুরগি পালনের পদ্ধতি

জাগো নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ০২:১৮ পিএম, ০৩ জুলাই ২০২২

আমাদের দেশেও টার্কি মুরগির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। তাই খামারের পাশাপাশি এটি অনেকে বাড়িতেও পালন করছেন। গৃহপালিত টার্কির সংকরায়নের ফলে বর্তমান জনপ্রিয় ব্রোঞ্জ টার্কি মুরগির সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে এই টার্কি মুরগি বেশি পালন করা হচ্ছে।

এখন আদর্শ প্রজননের মাধ্যমে কয়েক ধরনের টার্কির উপজাতি তৈরি করা হয়েছে। এসব জাতের মধ্যে রয়েছে ব্রোঞ্জ, ন্যারেনজেনসেট, সাদা হল্যান্ড, বারবন, রেড, কালো, শ্লেট এবং বেল্টসভিল হোয়াইট।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

সাধারণত ব্রোঞ্জ উপজাতের টার্কি মুরগি বেশি পালন করা হয়ে থাকে। লেজ এবং পাখার প্রান্তভাগে সাদা চিহ্ন থাকায় এদেরকে খুব আকর্ষণীয় মনে হয়। শরীরের পালকে তামাটে ব্রোঞ্জ রং এর চিহ্ন থাকে। এরা দেখতে বিবর্ণ মেটে রঙের। মিসিসিপি উপত্যকা এবং আমেরিকার পূর্বাঞ্চলের বন্য টার্কির সঙ্গে এদের রংয়ের সামঞ্জস্য রয়েছে।

প্রাপ্তবয়স্ক ব্রোঞ্জ টমের ওজন সাড়ে ১৬ কেজি প্রাপ্তবয়স্ক ব্রোঞ্জ হেনের ওজন ৯ কেজির উপরে হয়ে থাকে। একবছর বয়সী ব্রোঞ্জ টমের ওজন ১৫ কেজি এবং একবছর বয়সী ব্রোঞ্জ হেনের ওজন ৪ কেজি। প্রতিটি ব্রোঞ্জ হেন বছরে ৪০ থেকে ৮০টি ডিম দিয়ে থাকে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

বেশি পরিমাণে উর্বর ডিম উৎপাদনের উপর সফল টার্কি পালন নির্ভর করে। টার্কির ডিম উৎপাদনের হার খুবই কম। কম বয়সী হেন বয়স্ক হেন অপেক্ষা বেশি ডিম দেয়। ক্যালিফোর্নিয়াতে টার্কির ডিম উৎপাদনের রেকর্ড পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে টার্কি মুরগি প্রথম বছর ৭৭টি, দ্বিতীয় বছর ৫০টি, তৃতীয় বছরে ৪৪টি এবং পঞ্চম বছর ২৮টি ডিম দেয়।

ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়ার সময় এর উপর ডিম দেওয়ার প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। যেসব বাচ্চা কম সময়ে ফুটে বের হয় তারা শীতকাল পর্যন্ত ডিম দেয় এবং যেসব বাচ্চা বেশি সময়ে ফুটে বের হয় তারা প্রায় বসন্তকাল পর্যন্ত ডিম দেয়।

বিজ্ঞাপন

প্রাকৃতিক প্রজননের চেয়ে কৃত্রিম প্রজনন দিয়ে টার্কি মুরগির ডিমের উর্বরতা হার বাড়ানো হয়। যেকোন প্রজনন কর্মসূচির সফলতা নির্ভর করে প্রজনন দলের যোগ্যতার উপর। সতর্কতার সঙ্গে প্রজনন দল নির্বাচন সফলতার পূর্বশর্ত। আমেরিকার টার্কি ড্রাগন প্রজননের উদ্দেশ্যে তার কি নির্বাচনের জন্য কিছু নীতিমালা সুপারিশ করেছে যা অনুসরণ করা প্রয়োজন।

পোল্ট্রির অন্যান্য প্রজাতির পুষ্টির চেয়ে আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো কোনো পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে টার্কির অভাবজনিত লক্ষণ প্রকটভাবে দেখা দেয়। প্রথম চার সপ্তাহ পর্যন্ত টার্কির রেশনে ২৮ থেকে ২৬ শতাংশ প্রোটিন থাকা উচিত।

৪ থেকে ৮ সপ্তাহ ২৩ শতাংশ প্রোটিন থাকা উচিত। আট সপ্তাহ থেকে ১২ সপ্তাহে শতকরা ২১.৫ ভাগ প্রোটিন থাকা দরকার। অন্যদিকে ১২ থেকে ২৫ সপ্তাহের শতকরা ১৮ ভাগ ও ১৫ থেকে ২০ সপ্তাহে ১৬ পার্সেন্ট প্রোটিন দেওয়া উচিত।

বিজ্ঞাপন

প্রোটিনের উৎস হিসেবে মিট এন্ড বোন মিল, সয়াবিন মিল বিভিন্ন ধরনের আমিষযুক্ত প্রোটিন কনসেনট্রেট ব্যবহৃত করা যেতে পারে। অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো এসিড, আবশ্যকীয় খনিজ উপাদান এবং ভিটামিন, পর্যাপ্ত পরিষ্কার পানি বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে। অন্যদিকে স্ত্রী টার্কি মুরগি পুরুষ টার্কি মুরগির তুলনায় প্রোটিনের পরিমাণ বেশি প্রয়োজন হয়।

টার্কি প্রথম চার সপ্তাহ বয়সে দৈনিক গড়ে ৩০ গ্রাম করে খাদ্য গ্রহণ করে। ৩০ সপ্তাহ বয়সে এদের খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ দৈনিক ৩০০ গ্রাম। টার্কি মুরগি বেশ দক্ষতার সঙ্গে খাদ্য রূপান্তরিত করতে পারে।

শূন্য থেকে ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত সময়ে বাচ্চা প্রতি কেজি ওজন বৃদ্ধির জন্য ২ থেকে ২.৫ কেজি খাদ্য গ্রহণ করে। তিন মাস বয়সের পর থেকে এদের দৈহিক বৃদ্ধির হার কমে যায়। সপ্তম মাসে প্রতিটি টার্কি প্রায় ৩.৫ কেজি ওজনের হয়। অষ্টম মাসে ওজন প্রায় পাঁচ কেজি হয়।

বিজ্ঞাপন

বাড়ন্ত টার্কি মুরগি এবং প্রজনন দলে মৃত্যুজনিত কারণে লাভজনক টার্কি উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয়। বিভিন্ন রোগ ব্যাধির ফলে তার মৃত্যু ঘটে। কালোমাথা বা ব্ল্যাক হেডস টার্কির একটি মারাত্মক রোগ। এক ধরনের প্রোটোজোয়া এই রোগের কারণ।

এ জীবাণু টার্কির সিকাতে অবস্থান করে এবং কয়েক মাস পর্যন্ত সংক্রমণ ছড়িয়ে থাকে। বয়স্ক টার্কির চেয়ে তিন মাস বয়সী টার্কি মুরগি এ রোগের বেশি আক্রান্ত হয়। মাথার রং কালো হয়ে যায়।

হলদে রঙের পাতলা পায়খানা করে। যকৃত ফুলে বড় হয়ে যায়। ট্রাইকোমোনিয়াসিস রোগ কক্সিডিওসিসের সঙ্গে এর মিল রয়েছে। অনেক সময় ভুলবশত একে কক্সিডিওসিস মনে হতে পারে। এ রোগে আক্রান্ত ৬ থেকে ১০ সপ্তাহের বাচ্চা আক্রান্ত হয়।

বিজ্ঞাপন

ক্লস্ট্রিডিয়াম বটুলিজম নামক এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া থেকে এই রোগ সৃষ্টি হয়। এ রোগ হলে টার্কি ঝিমাতে থাকে, গলায় শব্দ হবে, শরীরের বিভিন্ন অংশ অবসন্ন হতে দেখা যায়।

এছাড়া মুরগির যেসব রোগ হয় তা টার্কির হতে দেখা যায়। যেমন কক্সিডিওসিস, ফাউল কলেরা, ফাউল পক্স এবং প্যারাটাইফয়েড বিভিন্ন প্রকার কৃমিতে এরা আক্রান্ত হয়। তবে সঠিক সময়ে চিকিৎসকের পারমর্শ নিলে টার্কি পালনে লাভবান হওয়া যায়।

এমএমএফ/এমএস

আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন