ভিডিও EN
  1. Home/
  2. কৃষি ও প্রকৃতি

ঝালকাঠিতে মুগ ডালে কৃষকের মুখে হাসি

মো. আতিকুর রহমান | ঝালকাঠি | প্রকাশিত: ১২:২৬ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

ঝালকাঠিতে চলতি মৌসুমে মুগ ডালের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রযুক্তি এবং কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৪০০ হেক্টর জমিতে আবাদ বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। ঝালকাঠির কৃষকদের উৎপাদিত এসব মুগ ডাল এখন জেলার স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এতে একদিকে যেমন ভালো দাম পাচ্ছেন চাষিরা; অন্যদিকে মুগ ডাল চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে তাদের। ফলে কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।

প্রান্তিক চাষিদের মতে, সময়মতো কৃষি বিভাগ থেকে বীজ ও প্রশিক্ষণ সহায়তা পাওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে। মাঠে চাষিদের মধ্যে বেশিরভাগ নারী। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরুষের পাশাপাশি তারা কাজ করছেন। উৎপাদন ভালো এবং লাভ বেশি হওয়ায় নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তারা আগ্রহী হচ্ছেন মুগ ডাল চাষে।

জেলার চারটি উপজেলার ঝালকাঠি সদরে ৬২৫ হেক্টর, নলছিটি উপজেলায় ৬৫৫ হেক্টর, রাজাপুর উপজেলায় ৬৬০ হেক্টর এবং কাঁঠালিয়া উপজেলায় ৬৬৫ হেক্টর মিলিয়ে জেলায় মোট ২ হাজার ৬০৫ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে আবাদ হয়েছে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে। এর মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মেট্রিক টনে ৪৫ কোটি টাকার মুগ ডাল উৎপাদন হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। রবি মৌসুমে পতিত থাকা জমিতে মুগ ডালের চাষ করছেন কৃষকেরা। বিশেষ করে বারি মুগ-৬ ও বারি মুগ-১৪ জাতের চাষ বেশি হয়েছে। ফলন আসার পর ৩ ধাপে মুগ ডাল উত্তোলন করতে পারেন চাষিরা।

ঝালকাঠিতে মুগ ডালে কৃষকের মুখে হাসি

স্থানীয় কৃষক জানান, এ বছর মুগ ডালের ফলন ভালো হয়েছে। সময়মতো কৃষি বিভাগ থেকে বীজ, সার ও প্রশিক্ষণ সহায়তা পেয়েছেন তারা। ঝালকাঠির উৎপাদিত এসব ডাল এখন জেলার চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এতে একদিকে যেমন ভালো দাম পাচ্ছেন চাষিরা; অন্যদিকে মুগ ডাল চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে তাদের।

কয়েকজন মুগ ডাল চাষি বলেন, ‘এ বছর মুগ ডাল চাষ লাভজনক হয়েছে। সেচ ও সার ছাড়াই ভালো ফলন পাওয়া যায়।’

মুগ ডাল চাষি আ. জব্বারের স্ত্রী হালিমা বেগম জানান, মূলত মুগ ডাল প্রক্রিয়াজাতকরণের বেশিরভাগ কাজ নারীদের করতে হয়। যেমন ক্ষেত থেকে তোলা, মাড়াই, ঝারানো, শুকানোসহ সব কাজই নারীদের হাতে করতে হয়।

আরও পড়ুন

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রবি মৌসুমে পতিত জমিতে মুগ ডাল চাষ করছেন কৃষক। ফলন আসার পর তিন ধাপে ডাল উত্তোলন করতে পারেন চাষিরা।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের কৃষক লিটন হোসেন বলেন, ‘এ বছর মুগ ডালের ফলন ভালো হয়েছে। আমি এক একর জমিতে ডাল আবাদ করেছি। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা লাভ থাকবে।’

ঝালকাঠিতে মুগ ডালে কৃষকের মুখে হাসি

নলছিটি উপজেলার কুলকাঠি ইউনিয়নের কৃষক রুস্তম আলী বলেন, ‘আবহাওয়া ভালো থাকায় এবং কৃষি বিভাগের সহযোগিতার কারণে এ বছর মুগ ডালের ফলন ভালো হয়েছে। খরচ বাদেও লাভ থাকবে।’

ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মো. রিফাত সিকদার জানান, আধুনিক জাতের মুগ ডাল চাষ এবং কৃষককে নিয়মিত পরামর্শ ও প্রযুক্তির ব্যবহার বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। এ কারণেই জেলায় মুগ ডালের আবাদ বেড়েছে। প্রকৃতি অনুকূলে থাকায় ও কৃষি বিভাগের পরামর্শে সঠিক পরিচর্যার কারণে ফলন ভালো হয়েছে। তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তা, সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে কর্মসংস্থানের। যা গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

তিনি বলেন, ‘মুগ ডাল একটি সুস্বাদু ও ডালজাতীয় পুষ্টিকর ফসল। মুগের রয়েছে বহুমুখী ব্যবহার। বিশেষ করে ডাল হিসেবে খাওয়া হয়। আবার মুগের ডাল ভেজে বাজারজাত করা হয়। এটি লাভজনক ফসল। এতে সেচ বেশি দরকার হয় না। কম সার দিতে হয়। মুগ রোপণে মাটির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধি পায়।’

এসইউ/এমএস

আরও পড়ুন