ভিডিও EN
  1. Home/
  2. কৃষি ও প্রকৃতি

আমন ধানের ক্ষেতে পার্চিং পদ্ধতিতে আগ্রহ বাড়ছে

আল মামুন | জয়পুরহাট | প্রকাশিত: ১২:২২ পিএম, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

জয়পুরহাটে আমন ধানের ক্ষেতে পোকা দমনে কীটনাশকের পরিবর্তে এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পার্চিং পদ্ধতি। ধানি জমিতে গাছের ডাল, খুঁটি, বাঁশের কঞ্চি ও ধইঞ্চার ডাল পোঁতা হয়। সেগুলোর ওপর বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বসে ফসলের ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে ফেলে। পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার এ পদ্ধতিকেই পার্চিং বলা হয়।

পার্চিং পদ্ধতি ফসলের পোকা দমনের জন্য অত্যন্ত কম ব্যয়হীন এবং পরিবেশবান্ধব। এ পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদন খরচ ও কীটনাশকের ব্যবহার কমে যাওয়ায় এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে জেলার কৃষকদের মাঝে। অনেক কৃষক আমন ফসলের ক্ষেতে কীটনাশক পরিহার করে পোকা দমনে সহজ ও লাভজনক পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করছেন।

পার্চিং সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। ডেড পার্চিং ও লাইভ পার্চিং। মরা ডালপালা পুঁতে দিলে তা হবে ডেড পার্চিং আর জীবন্ত ধইঞ্চার ডাল জমিতে পুঁতে দিলে তা হবে লাইভ পার্চিং।

আমন ধানের ক্ষেতে পার্চিং পদ্ধতিতে আগ্রহ বাড়ছে

কৃষকেরা তাদের আমন ফসলের ক্ষেতকে ক্ষতিকারক পোকা থেকে রক্ষার জন্য বাঁশের আগা, বাঁশের কঞ্চি, গাছের ডাল এবং জীবন্ত ধইঞ্চার ডাল পুঁতে বিভিন্ন পোকামাকড় থেকে ফসল রক্ষা করছেন। এক বিঘা জমিতে তারা ৬-৮টি বাঁশের আগা, কঞ্চি, ডাল ও ধইঞ্চার ডাল পুঁতেছেন।

এসব ব্যবহারে শালিক, বুলবুলি, ফিঙেসহ বিভিন্ন ধরনের পোকাখাদক পাখি ক্ষেতের পার্চিংয়ের ওপরে বসে। সেখান থেকে উড়ে উড়ে গিয়ে ক্ষতিকারক পোকা ও পোকার ডিম খেয়ে ফেলে। ফলে কীটনাশক ছাড়াই পোকার আক্রমণ থেকে ধানগাছগুলো রক্ষা পাচ্ছে। এ ছাড়া পরিবেশের সৌন্দর্যের পাশাপাশি ধান উৎপাদন বেড়ে যাচ্ছে কয়েকগুণ।

আরও পড়ুন
মৃতপ্রায় খালে বিপন্ন জনপদ, বোরো ধান চাষে অনিশ্চয়তা
আলু বীজের দাম সর্বনিম্ন হলেও সারের দাম বেশি

হিচমী বাজারের নুরুল ইসলাম, কড়ই মাদ্রাসা গ্রামের লাবু মিয়া, ধারকী গ্রামের দেলোয়ার হোসেন, কোমরগ্রামের আতোয়ারসহ অনেক কৃষক জানান, এবার তাদের জমিতে আমন ধানের চারাগুলো সবুজ ও সতেজ হয়ে উঠেছে। তারা পুরো ক্ষেতে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। বিঘাপ্রতি আমন ধানের ক্ষেতে ৫টি গাছের ছোট ডাল, বাঁশের কঞ্চি এবং ৩টি জীবন্ত ধইঞ্চার ডাল পুঁতে দিয়েছেন। ফিঙ্গে, শালিক ও বুলবুলি ওই ডালে বসে খেতের ক্ষতিকর পোকা ধরে খেয়ে ফেলছে। এতে তাদের জমিতে ভালো কাজ হচ্ছে।

আমন ধানের ক্ষেতে পার্চিং পদ্ধতিতে আগ্রহ বাড়ছে

বটতলী গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এ পদ্ধতির ফলে ফসল উৎপাদনের খরচ কম হচ্ছে এবং কীটনাশকের ব্যবহার অনেক কমে গেছে। এতে তারা খুব উপকার পাচ্ছেন।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সাদিকুল ইসলাম বলেন, ‘পোকা দমনে শুধু কীটনাশকে ভরসা করায় উৎপাদন খরচ একটু বেশি হয়। এখন পার্চিং পদ্ধতিতে কৃষকদের খরচ কিছুটা হলেও কমছে। এ পদ্ধতি বালাইনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখছে। সেইসঙ্গে জমিতে জৈব সার হিসেবে পাখির বিষ্ঠা পড়ে জমির উর্বরতা বাড়ছে।’

জয়পুরহাট জেলায় এবার ৭২ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করছেন কৃষকেরা।

এসইউ/এমএস

আরও পড়ুন