ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

জবিতে জুলাইযোদ্ধাদের মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তায় কর্মশালা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | জবি | প্রকাশিত: ০২:৫২ পিএম, ২১ জুন ২০২৫

জুলাই-আগস্ট গণঅভূত্থানের যোদ্ধাদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। শনিবার (২১ জুন) দিনব্যাপী এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

এই কর্মশালায় তাদের মানসিক চাপ মোকাবিলা এবং সুস্থ জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় কৌশল শেখানো হয়। ‘নির্বাণ’ নামের এই কর্মশালার মূল লক্ষ্য হলো, যারা এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখা এবং তাদের পাশে থাকা।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের কনফারেন্স রুমে ক্যাম্পেইন ফর পপুলার এডুকেশন (ক্যাম্পি), কগনিটিভলি ইয়োরস এবং গ্রো-এর সহযোগিতায় এ কর্মশালার আয়োজন করে সফরন ফাউন্ডেশন। সফরন ফাউন্ডেশন একটি অলাভজনক সংস্থা। এটি জুলাইযোদ্ধাদের সহায়তা করার জন্য কাজ করে। আহতদের মানসিক স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং দক্ষতা উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

আজকের কর্মশালায় জুলাই অভ্যুত্থানের সময় আহত ও গ্রেফতার, অংশগ্রহণকারী যোদ্ধাদের ওপর মানসিক ট্রমার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব এবং তার থেকে উত্তরণের পথ নিয়ে আলোচনা করেন আলোচকরা। এসময় তারা মানসিক সুস্থতা নিশ্চিতে পর্যাপ্ত ঘুম, সুষম খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম, সামাজিক যোগাযোগ বজায় রাখা এবং প্রয়োজনে পরামর্শ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী আহম্মদ নাইম বলেন, আজকের কর্মশালায় অংশ নিয়ে প্রথমবার বুঝেছি, আমার ভেতরে যে মানসিক টানাপোড়েন চলছে, তা আমি একা অনুভব করছি না। এখানে এসে বুঝেছি, এমন অনেকেই আছেন যারা একই যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে গেছেন এবং একে মোকাবিলা করতে চাইছেন। কেউ আমাদের অনুভবগুলো বুঝতে চায়, এই বিশ্বাসটুকুই মানসিকভাবে অনেক শক্তি দেয়।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক রায়হানা শারমিন বলেন, নিজের আবেগ চিহ্নিত করা, তা গ্রহণ করা এবং প্রয়োজনীয় সময়ে তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারাটাই হলো ইমোশন রেগুলেশন। অনেক সময় অভ্যুত্থানের মতো ঘটনার পর মানুষ রাগ, ভয়, দুঃখ, এই অনুভূতিগুলো দমিয়ে রাখে, যা পরবর্তীতে আরও বড় মানসিক সমস্যা তৈরি করে। এগুলো প্রকাশ, বুঝে নেওয়া এবং প্রয়োজনে থেরাপির মাধ্যমে পরিচালনা করা মানসিক সুস্থতার জন্য অপরিহার্য।

বিজ্ঞাপন

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের খণ্ডকালীন অধ্যাপক এবং নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার ইউএনও ইমদাদুল হক তালুকদার বলেন, ট্রমার পর মানসিক পুনরুদ্ধারে গ্রাউন্ডিং টেকনিক খুব কার্যকর। যেকোনো অস্থির মুহূর্তে নিজের মনকে বর্তমান সময়ে ফিরিয়ে আনার জন্য শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন, স্পর্শ ও শব্দে মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত উপকারি। পাশাপাশি ট্রমা জার্নালিং অর্থাৎ নিজের যন্ত্রণার অভিজ্ঞতা লিখে রাখাও ট্রমা থেকে মুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়।

কর্মশালায় প্রফেসর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডা. মো. আজিজুল আজিজুল ইসলাম বলেন, মন হলো শরীরের চালিকা শক্তি, চিন্তা ও চেতনা নষ্ট হয়ে গেলে শুধু ব্যক্তি নয়, একটা প্রজন্ম বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তুমি যদি মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে, তাহলে ‘জুলাই বিপ্লব’-এর মতো আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে পারতে না। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ মাদকাসক্ত, যার মধ্যে ৭০ শতাংশই স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এটি শুধু উদ্বেগজনক নয় বরং জাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে সরাসরি হুমকি।

এতে অংশ নেন অভ্যুত্থানে আহত ও ক্ষতিগ্রস্তরা, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, মানবাধিকারকর্মী, শিক্ষক এবং বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

তৌফিক হোসেন/এসএনআর/এএসএম

বিজ্ঞাপন