ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

বেরোবি

একই মামলার দুই আসামি: এক শিক্ষক পেলেন পদ, অন্যজনের ছুটি স্থগিত

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | বেরোবি | প্রকাশিত: ১০:২১ এএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) দুই শিক্ষককে ঘিরে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। একই মামলায় অভিযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও একজন শিক্ষককে দেওয়া হয়েছে নতুন প্রশাসনিক দায়িত্ব, আর অন্যজনের উচ্চশিক্ষার ছুটি আটকে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

অধ্যাপক শেখ মাজেদুল হক, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক। পিএইচডি করার জন্য মালয়েশিয়ায় যেতে শিক্ষা ছুটির আবেদন করেছিলেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় তার ছুটি আটকে দেওয়া হয়।

সূত্র অনুযায়ী, জুলাই অভ্যুত্থানের মামলায় তার নাম থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এজাহারে তার নাম রয়েছে ৭৩ নম্বর আসামি হিসেবে।

অন্যদিকে সহকারী অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলাম, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষক, একই মামলার ১৩৩ নম্বর আসামি হওয়া সত্ত্বেও তাকে সম্প্রতি সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

একই মামলায় অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের প্রতি প্রশাসনের এই ভিন্ন আচরণে ক্যাম্পাসে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, জুলাই আন্দোলনের ওপর দাঁড়িয়ে বর্তমান প্রশাসন কীভাবে একজন আসামিকে সহকারী প্রক্টরের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিতে পারে? আবার একই মামলার অন্য একজন শিক্ষকের শিক্ষা ছুটি আটকে দেয়। এটা প্রশাসনের দ্বিচারিতা ছাড়া আর কিছুই না।

জানা যায়, বর্তমান প্রক্টর ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ড. ফেরদৌস রহমানের বিশেষ সুপারিশেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জুলাই মামলার আসামি হওয়া সত্ত্বেও মো. মনিরুল ইসলামকে সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব প্রদান করে। কারণ তিনি প্রক্টরের আস্থাভাজন ও একই বিভাগের শিক্ষক।

তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, জুলাই আন্দোলনে রংপুর শহরে আহত মো. শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীসহ ১৪০ জনের নাম উল্লেখ করে রংপুর শহরের কোতোয়ালি থানায় এই মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে শহিদুল উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রংপুর শহরে বৈষম্যবিরোধী ৮০০ থেকে ১০০০ ছাত্র-জনতা বিকেল ৩টার দিকে রংপুর শহরের টাউন হলের মোড়ে পৌঁছালে সেখানে উল্লিখিত আসামিরা ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায়, এতে শহিদুল মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজে ১০ দিন চিকিৎসা দেওয়ার পর তিনি সুস্থ হন।

এ বিষয়ে জানতে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক শেখ মাজেদুল হককে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

জুলাই মামলার আসামিকে কেন সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব দেওয়া হলো এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘মামলাটি ভুয়া। মামলার বাদী বলেছে এরা জড়িত না। বাদী অ্যাফিডেভিট করে দিয়েছে। এই জন্য আমরা তাকে রেখেছি।’

একই প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘প্রক্টর তার সহকারী প্রক্টরকে পছন্দ করেন। তিনি এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।’

জুলাই মামলার আসামিকে কেন সহকারী প্রক্টর করা হলো এমন প্রশ্নে বেরোবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী বলেন, যাকে সহকারী প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে যে শুধু মামলা হয়েছে এমন নয়। আরওতো অনেক আসামি আছে, তাদেরকে পুলিশ ধরছে না কেন? যদি পুলিশ ধরাধরি করে তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। আর এই মামলায় বাদী অ্যাফিডেভিট করে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ওই শিক্ষকতো নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা নিচ্ছে। আর এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সবাই আওয়ামীপন্থি শিক্ষক। তাহলে কাকে নিয়ে প্রশাসন চলবে?

ফারহান সাদিক সাজু/এফএ/জেআইএম