ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

উন্নয়নযুদ্ধে জয়লাভের জন্যই কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন অপরিহার্য

প্রকাশিত: ০৭:০৮ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ বলেছেন, ‘টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের বিকল্প নেই। দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নযুদ্ধে জয়লাভের জন্যই কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন অপরিহার্য। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি অর্জন ও স্থিতিশীলতা সংরক্ষণে কৃষির ভূমিকাই মুখ্য।

মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববদ্যিালয়ের (বাকৃবি) সপ্তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে বাকৃবি চ্যান্সেলরের ভাষণে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারেরর নিরলস প্রচেষ্টায় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বৈরিতা মোকাবিলা করে খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে একটি বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা শতকরা ১৫ ভাগে নামিয়ে এনে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে বর্তমান সরকার “রূপকল্প-২০২১” ঘোষণা করেছে। এই ঘোষণায় অন্যান্য খাতের পাশাপাশি যথাযথভাবে কৃষিখাতের ওপর সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাকে আরো এগিয়ে নেয়ার জন্য কৃষি খাতের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে কৃষক, কৃষিবিদ, কৃষিবিজ্ঞানীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সমন্বিত প্রয়াস চালানোর উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।

"
তিনি বলেন, লবণাক্ত সহিষ্ণু ধান ও অন্যান্য ফসলের জাত উদ্ভাবনসহ কম সময়ে উৎপাদনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবনে গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। মনে রাখতে হবে কৃষির উন্নয়নের ওপরই আমাদের সার্বিক উন্নয়ন নির্ভরশীল।

চ্যান্সেলর বলেন, উচ্চতর কৃষি শিক্ষার পথিকৃৎ ও প্রধান বিদ্যাপীঠ হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষা ও গবেষণায় বিশেষ যত্নবান। আপনারা জেনে আনন্দিত হবেন, ‘হাওর ও চর উন্নয়ন ইনস্টিটিউট’ এবং কক্সবাজারে ‘সামুদ্রিক মাৎস্য বিজ্ঞান, মাঠ গবেষণা ও শিক্ষাকেন্দ্র’ স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। এগুলো নিঃসন্দেহে বাকৃবি’রই গতিশীলতার পরিচয় বহন করে।

তিনি বলেন, সরকারের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে একটি নতুন ছাত্রী হল এবং শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের জন্য একটি বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণসহ শিক্ষা ও গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য তিনি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

"
এরআগে বাকৃবি কৃষি অনুষদের করিডোর থেকে সমাবর্তন র‌্যালি নিয়ে চ্যান্সেলর শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে প্রবেশ করেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শুরুতে রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর মো. আব্দুল হামিদ সমাবর্তনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববদ্যিালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলী আকবর। এরপর চ্যান্সেলর অনুষদীয় ডিন কৃর্তক উপস্থাপিত ২০১০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত চার হাজার নয়শ’ নয়জনকে ডিগ্রি প্রদান করেন।

স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন এক হাজার ৯১৯ জন। এর মধ্যে ভেটেরিনারি -১৫৪, কৃষি-৭৪৩, পশু পালন- ২২৫, কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজ বিজ্ঞান-২০৭, কৃষি প্রকৌশল-১৫০, ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং-৯২ ও মাৎস বিজ্ঞান-৩৪৮। মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনকারীর সংখ্যা দুই হাজার ৮৫১ জন এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন ১৩৯ জন। রাষ্ট্রপতি আনুষ্ঠানিকভাবে ডিগ্রি অর্জনকারীদের স্বর্ণপদক ও সনদপত্র প্রদান করেন।

এবারের সমাবর্তন বক্তা ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান। সমাবর্তনে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ এমপি, মোসলেম উদ্দিন এমপি, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার জি এম সালেহ উদ্দিন, ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ আলী, ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুস্তাকীম বিল­াহ ফারুকী, পুলিশ সুপার মঈনুল হকসহ ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

"
সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে নতুন সাজে সাজানো হয়। নানা ফেস্টুন, ব্যানার ও আলোকসজ্জাসহ গোটা ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ ভবন, স্থাপনা, সড়ক, মাঠঘাট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। এ উপলক্ষে সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী কনভোকি এবং ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের মাঝে আনন্দ ও উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। শহরে দুইদিন ধরে ইজিবাইক চলাচল বন্ধ রাখা হয়।

উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালের ১৮ আগস্ট বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার পর প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৬৮ সালে। সর্বশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ২০১১ সালের ৮ মার্চ। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর অনুষ্ঠিত সপ্তম সমাবর্তনকে জাঁকজমকপূর্ণ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়।

আতাউল করিম খোকন/বিএ