ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

৩ ছাত্রকে নির্যাতনের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে

জেলা প্রতিনিধি | পাবনা | প্রকাশিত: ০২:৫০ পিএম, ০৫ এপ্রিল ২০২৩

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান হলে আটকে রেখে তিন ছাত্রকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টা থেকে দিনগত রাত ৩টা পর্যন্ত এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী তিন শিক্ষার্থী হলেন- লোক প্রশাসন বিভাগের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র গোলাম রহমান জয়, ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের আসাদুল ইসলাম এবং ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবদুল আজিজ। এদের মধ্যে গোলাম রহমানের অবস্থা গুরুতর। তিনি বর্তমানে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। অপর দুজন পাবনা সদর থানায় পুলিশ হেফাজতে আছেন।

নির্যাতিত শিক্ষার্থী ও তাদের বন্ধুরা জানিয়েছেন, তারাবি নামাজ পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে গল্প করছিলেন। ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত কয়েকজন শিক্ষার্থী কোনো কারণ ছাড়াই তাদের ওপর নির্যাতন করেছে।

তবে ছাত্রলীগ নেতারা এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, শিবিরের গোপন বৈঠক চলাকালে শিক্ষার্থীরা তাদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। তাদের ওপর কোন নির্যাতন করা হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের কাছে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগের ১০-১২ জন কর্মী এসে তাদের শিবির কি না জানতে চান। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের শহীদ মিনার থেকে হলে নিয়ে যান। হলের তিনটি রুমে নিয়ে ক্রিকেট স্টাম্প, রড, হাতুড়ি, জিআই পাইপ দিয়ে তাদের নির্যাতন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবুর দাবি, রাত ১২টার দিকে খবর পাই কয়েকজন শিবিরকর্মী বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে গোপন বৈঠক করছিলেন। সাধারণ ছাত্ররা তাদের আটক করে রাখে। তারা হলের আবাসিক ছাত্র নন এবং ক্যাম্পাসের বাইরে থাকেন। অথচ এত রাতে তাদের বৈঠক ছিল সন্দেহজনক। এ সময় আটক তিন ছাত্র স্বীকার করেন তারা শিবিরকর্মী। তাদের কাছে শিবিরের বইপত্রও পাওয়া যায়।

ফরিদুল ইসলাম বাবু আরও বলেন, ছাত্রলীগকর্মীরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মাত্র। তাদের কোনো নির্যাতন করা হয়নি। আমরা মারধরের সঙ্গে জড়িত নই।

jagonews24

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কামাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, রাত সাড়ে ১২টার দিকে খবর পাই ক্যাম্পাসে ঝামেলা হয়েছে। তখন সহকারী প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টাকে নিয়ে ক্যাম্পাসে পৌঁছাই। দেখতে পাই তিনজন ছাত্রকে হলের শতাধিক ছাত্র ঘিরে রেখেছে। তখন উপস্থিত ছাত্ররা জানান ওই তিনজন শিবিরকর্মী। তারা গোপন বৈঠক করছিল।

কামাল হোসেন আরও বলেন, জিজ্ঞাসা করলে তারা জানায়, ১০-১২ জন বসে গল্প করছিল। অন্যরা চলে গেলেও তিনজন থেকে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সঙ্গে কথা বলে তাদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছি। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তাৎক্ষণিক উত্তেজনা নিরসন হয়। আইন নিজের গতিতে চলবে। তারা আলাদা করে কোনো মামলা হয়নি।

এদিকে বুধবার (৫ এপ্রিল) ভোর ৬টার দিকে মেস থেকে বাসায় যাওয়ার সময় শিবির সন্দেহে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউআরপি বিভাগের ১২তম ব্যাচের ছাব্বির হোসেন শাওন নামে এক শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা জানান, পাবনা শহর থেকে ঝিনাইদ যাওয়ার বাস থেকে শাওনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে শাওনকে আর পাওয়া যাচ্ছেনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা জাগো নিউজকে বলেন, রাত ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাই। পুলিশকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, শিবিরের তিন শিক্ষার্থীকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আটক করে রেখেছে। তিনি দেখতে পান তিন শিক্ষার্থী বেশ মারধরের শিকার হয়েছেন। তখন তাদের আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানায়, হলে নিয়ে তাদের মারধর করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্য দু’জন পুলিশ হেফাজতে আছে।

আমিন ইসলাম জুয়েল/এসজে/এমএস