চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
বিতর্কিত সেই সহকারী প্রক্টরের স্ত্রীর নিয়োগ সুপারিশ বাতিল
ফাইল ছবি
নানা অনিয়মে বিতর্কিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পালি বিভাগের প্রভাষক প্রার্থী অভি বড়ুয়ার নিয়োগ সুপারিশ বাতিল হয়েছে। স্থায়ী প্রভাষক পদে তিনি চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্ত ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি সহকারী প্রক্টর অরূপ বড়ুয়ার স্ত্রী। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪৪তম সিন্ডিকেট সভায় তথ্য জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ থাকায় এ নিয়োগ বাতিল হয়।
নিয়োগ বাতিলের বিষয়টি শনিবার (১৫ জুলাই) জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান।
তিনি বলেন, পালি বিভাগের স্থায়ী প্রভাষক পদের নিয়োগ সুপারিশ বাতিল হয়েছে। ওই পদে নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
বারবার পেছানো, নিয়োগে উপাচার্যের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেওয়াসহ নানা কারণে আলোচিত ছিল ৫৪৪তম সিন্ডিকেট। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়।
১৪ জুলাই সকালে ‘তথ্য জালিয়াতি করেও নিয়োগ পাচ্ছেন সহকারী প্রক্টরের স্ত্রী ’ শিরোনামে জাগোনিউজ২৪.কম-এ খবর প্রকাশিত হয়। সেখানে দেখানো হয় তথ্য জালিয়াতি, আবেদনের শর্ত পূরণ না করা, পরিকল্পনা কমিটির সুপারিশ না থাকা, বিভাগীয় সভাপতির নোট অব ডিসেন্ট (দ্বিমত) থাকা সত্ত্বেও সহকারী প্রক্টর অরূপ বড়ুয়ার স্ত্রী হওয়ার সুবাদে পালি বিভাগের স্থায়ী প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পেতে চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয় তাকে।
জানা যায়, সিন্ডিকেট সভায় পালি বিভাগের আলোচিত অভি বড়ুয়ার নিয়োগ বাতিল হয়। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ইউজিসির নিয়োগ শর্ত না মেনে উপাচার্যের অনুমতিতে ক্রমে অস্থায়ী প্রভাষক পদে বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত যে দুজন সুপারিশ প্রাপ্ত ছিলেন তাও বাতিল হয়। নতুন করে স্থায়ী প্রভাষক পদে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এছাড়া সিন্ডিকেটে পরিকল্পনা কমিটির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে উপাচার্যের নির্দেশে আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী কোনো বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দিতে হলে পরিকল্পনা কমিটির সভায় অনুমোদন দেওয়া লাগবে। পরিকল্পনা কমিটি অনুমোদন না দিলে উপাচার্য তা সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু সভায় ওঠানোর আগেই উপাচার্যের নির্দেশে ১৩ জুলাই আইন বিভাগে দুজন নতুন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।
বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে সিন্ডিকেট সভায় নোট অব ডিসেন্ট (দ্বিমত) প্রকাশ করেন ড. নঈম উদ্দিন হাছান আওরঙ্গজেব ও মোহাম্মদ আলী। এ দুজনের পাশাপাশি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দীন খান ও মোয়াজ্জেম হোসাইন ৫৪৩তম সিন্ডিকেট সভার কার্যবিবরণীর অনুমোদন দেওয়া থেকেও বিরত থেকেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিন্ডিকেট সদস্য বলেন, অভি বড়ুয়ার নিয়োগ নিয়ে সারাদেশে সমালোচনা হচ্ছিল। তথ্য জালিয়াতি, পরিকল্পনা কমিটির অনুমতি না থাকা, বিভাগীয় সভাপতির দ্বিমত ইত্যাদি কারণ দেখিয়ে তা সিন্ডিকেটে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এছাড়া একটি পদে বিজ্ঞপ্তির অতিরিক্ত আরও দুজনকে সুপারিশ করা হয়। এবারের সিন্ডিকেটে সেটাও বাতিল হয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের মোবাইল নম্বরে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
আহমেদ জুনাইদ/এসজে/জিকেএস